সিজার লুইস আর কার্লোস বিলার্দোর সঙ্গে এখন ব্র্যাকেটবন্দী স্কালোনি
- আফরিন সুলতানা শোভা
- প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৪৭ PM , আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:০৮ PM
এই তো সেদিনের কথা। দিনের পর দিন ব্যর্থতার বোঝা ভারী হচ্ছে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের। ৩৬ বছর জেতা হয়নি সোনালি ট্রফি। লিওনেল মেসি, আনহেল ডি মারিয়ার মতো তারকারা ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে। এমনই এক ভাঙা তরীর দায়িত্ব পড়লো এক তরুণের ওপর। এবারের বিশ্বকাপে বয়সের দিক থেকে সবচেয়ে তরুণ কোচ লিওনেল স্কালোনি। ১৯৭৮ সালে সিজার লুইস মোনোত্তি, ১৯৮৬–তে কার্লোস বিলার্দোর সঙ্গে তিনি এখন ব্র্যাকেটবন্দী।
বিশ্বকাপজয়ী কোচ হিসেবে নিজের কীর্তিটা গড়লেন মহানাটকীয় এক ম্যাচের পর। তর্ক-বিতর্কে না গিয়ে আর্জেন্টাই কোচ নিজের কাজটা করে গেছেন নিজের মতো।
কোচের দায়িত্ব পাওয়ার আর্জেন্টাইনদের কাছে খুব একটা অভিনন্দন পাননি লিওনেল স্কালোনি। ম্যাচ শেষে পুরো সময়টাকেই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনির। তিনি কাঁদছিলেন। তাঁকে কাঁদতেই হতো।
২০১৮ সালে আর্জেন্টিনা দলের দায়িত্ব নেন স্কালোনি। খুব কঠিন সময় পার করছিল তখন দলটি। স্কালোনি দায়িত্ব নিয়ে দলটাকে যেন খাদের কিনার থেকে তুলে এনেছেন। করে তুলেছেন অপ্রতিরোধ্য।
২০১৬ সালে কোপা হেরে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলা মেসিকে ফের খেলায় ফেরাতে স্কালোনির ভূমিকা অনেক। তার বার্তাতেই মেসি সিদ্ধান্ত পাল্টে ছিলেন। মেসিকে ২০২১ সালেই কোপার স্বাদ দেন স্কালোনি। আর ২০২২ সালে এনে দিলেন বিশ্বকাপ।
সেই হিসেবে বলা যায় হারের বেদনায় বিশ্বছাড়া মেসিকে বিশ্বকাপ জেতানোর বড় কৃতিত্ব স্কালোনি অনায়াসে পেতেই পারেন।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে লিওনেল মেসির সতীর্থ ছিলেন স্কালোনি। তবে খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার। মাত্র ৭ ম্যাচ খেলেছিলেন। তবে কোচিংয়ে তিনি দারুণ করছেন।
আরও পড়ুন: বড় ম্যাচের নেপথ্য নায়ক ডি মারিয়া
ম্যাচ শেষেও কথার আস্ফালনে গেলেন না স্কালোনি। কেবল বললেন, ‘আমি গর্বিত। অন্যান্য দিনের তুলনায় আমি কম রোমাঞ্চিত, আজ আমি মুক্ত। এই দলটি আমাকে কেবল গর্বিতই করেছে। এটা তাদের দিন।’
এমন সাফল্যেও যিনি থাকতে পারেন এরকম স্থির বিশ্বজয় করার মন্ত্র তো কেবল তিনিই জানেন নিশ্চয়ই।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের তুলন টুর্নামেন্টে ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। সেখানে লা আলবিসেলেস্তেদের অনূর্ধ্ব-২১ দলটি ফ্রান্সকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল। আর আর্জেন্টিনার সেই দলের সদস্য ছিলেন মেসিদের বর্তমান গুরু স্কালোনি। মাঠে লিওনেল মেসি, আনহেল ডি মারিয়া বা এমিলিয়ানো মার্টিজেনের যে বীরত্বগাঁথা— তার পেছনের কারিগর হয়ে আলো ছড়ালেন লিওনেল স্কালোনি।