খসে পড়ছে দেয়ালের পলেস্তারা, ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা
- পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ০৪:৫৪ PM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০২:০১ PM

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান হচ্ছে একটি জরাজীর্ণ ভবনে, যা তাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। বিদ্যালয়টি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও, এর ভবনের অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। বর্তমানে এখানে মোট ১৬৮ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীতে রয়েছে ২৫ জন, প্রথম শ্রেণীতে ২০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ২২ জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ৩৩ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৩১ জন এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ৩৭ জন। জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করতে গিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন। ভবনের প্লাস্টার মাঝে মাঝে ভেঙে পড়ছে, যা শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও আহত করার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও ভীতি প্রকাশ করে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আমাদের সন্তানদের ক্লাস করতে পাঠানো আমাদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। আমরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে বিদ্যালয়ের অনেক ক্ষতি হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে। শ্রেণীকক্ষের অভাবে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: এক কক্ষের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোচিং সেন্টারকেও হার মানায় যে স্কুল
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিমা আক্তার ও রণজিৎ কুন্ড বলেন, জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করতে আমাদের খুবই ভয় হয়। আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি, যেকোনো সময়ে দেয়াল ভেঙে পড়তে পারে।
এক অভিভাবক ফারজানা বেগম বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করছে। আমরা সবসময়ই আতঙ্কে থাকি। আমরা এর একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই, তাই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের গভীর নলকূপটি দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে রয়েছে, ফলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিথীকা সাহা বলেন, ‘অফিস কক্ষসহ প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীকক্ষ খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মাঝে মাঝে প্লাস্টার খসে পড়ছে। আমার কাঁধের পাশে দুইবার প্লাস্টার ভেঙে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ভবন মেরামত দরকার। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তখন এর দায়ভার কে নেবে?’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘উক্ত বিদ্যালয়টি আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভবনের ব্যাপারে অবহিত করেছি। আশা করি অবিলম্বে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’