প্রাথমিকে সদ্য যোগদানকৃত শিক্ষকদের থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর  © সংগৃহীত

ফেনীর সোনাগাজীতে সদ্য যোগদানকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের ‘খুশি’ করতে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, দ্রুত বেতন, ঈদ বোনাস ও বৈশাখি ভাতা উত্তোলনের নামে এই টাকা নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সোনাগাজীতে নতুন নিয়োগ পাওয়া ৪৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪২ জন যোগদান করেছেন। এর মধ্যে ৩৯ জন শিক্ষকের কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে মোট ৩১ হাজার ২০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে। এদিকে, বিকাশের মাধ্যমে ৩৯ জন শিক্ষকের টাকা প্রদানের তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় চলছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বলেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারীদের ঈদ উপহার দেওয়ার জন্য এই টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা যায়, এক শিক্ষক নতুন শিক্ষকদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছেন। ওই গ্রুপের এডমিন সোনাগাজীর আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার। তিনি গ্রুপে লিখেছেন, নতুন শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য ভাতা উত্তোলনের জন্য হিসাবরক্ষণ অফিসে টাকা দিতে হবে। না দিলে ফাইল সম্পূর্ণ হবে না এবং বেতন আটকে যাবে। এ কাজগুলো করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। এজন্য প্রত্যেকে ৮০০ টাকা করে পাঠালে দ্রুত কাজ শেষ হবে। সামনে ঈদ, তাদের (উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা) উপহার দিলে তারা খুশি হবেন। এতে আমাদের সুবিধা হবে। এছাড়া, ১৩ মার্চ ফুল ক্রয়ের জন্য ১ হাজার ৫৮০ টাকা খরচ হয়েছে বলেও তিনি ওই গ্রুপে উল্লেখ করেন।

জানা গেছে, নবীন শিক্ষকদের সংবর্ধনার জন্যও তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষক তমালিকা দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘কাগজপত্র ফটোকপি করতে আমি ৮০০ টাকা দিয়েছি।’

আরেক শিক্ষক নিপা দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি টাকা দিয়ে পরে ফেরত নিয়েছি। চাকরিতে যোগদানের সাথে সাথে এভাবে চাঁদা দিতে অনেকে হতভম্ব।’

সোনাগাজী উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবু ইউসুফ জানান, ‘শিক্ষকদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিল দাখিল করা হলে তারা বেতন উত্তোলন করতে পারবেন।’ উপহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাগাজী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) এস এম তাহেরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি এসব বিষয়ে কিছু জানি না। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 


সর্বশেষ সংবাদ