বুয়েট-ঢাবিতে চান্স পেলেন ভোলার শিক্ষক দম্পতির সন্তান সামাদ

  © টিডিসি ছবি

মো. আব্দুস সামাদ। ভোলার লালমোহনের প্রত্যন্ত এলাকা লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসায় মায়ের চাকরির সুবাধে নানা বাড়িতে থেকেই পড়ালেখা করেছেন তিনি। প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত নানা বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করেও কৃতিত্বপূর্ণ এক অর্জন করেছেন সামাদ।

নিজের মেধায় জায়গা করে নিয়েছেন দেশের শ্রেষ্ঠ দুই বিদ্যাপীঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটে পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে দুইটিতেই উত্তীর্ণ হয় আব্দুস সামাদ। যে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পড়ালেখার স্বপ্ন থাকলেও তা পূরণ হয় না। সেখানে আব্দুস সামাদ দেশের এই শ্রেষ্ঠ দুই বিদ্যাপীঠেই ভর্তির সুযোগ পায়। যার মধ্যে তার বুয়েটের মেরিট লিস্টে ৪২৫ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিট লিস্টে ৩৮২।

এখন দেশের শ্রেষ্ঠ এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেকোনো একটিতে ভর্তি হবেন মেধাবী শিক্ষার্থী মো. আব্দুস সামাদ।

জানা যায়, সামাদ ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত নানা বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়ালেখা করছেন। তার মা নাজমা বেগম লর্ডহার্ডিঞ্জ সৈয়দাবাদ নূরজাহান মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষিকা। সে সুবাধে মায়ের সঙ্গে নানা বাড়িতে থাকছেন আব্দুস সামাদ।

তার পৈত্রিক বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নে। সামাদের বাবা মো. সাইফউল্লাহও একজন শিক্ষক। তিনি চরফ্যাশনের চরআইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক। বাবা-মায়ের ৩ সন্তানের মধ্যে সামাদ সকলের বড়।

অন্যদিকে, লর্ডহার্ডিঞ্জ কিন্ডারগার্টেন থেকে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর শেষ করে লর্ডহার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। পরে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এসে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। সেখান থেকেই শেষ করেন জেএসসি ও এসএসসি। এই দুই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে জেলায় প্রথম হয় আব্দুস সামাদ। এরপর ঢাকার নটর ডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সেখান থেকেই শেষ করেন এইচএসসি। ওই পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পান তিনি।

নিজের অর্জনের ব্যাপারে মো. আব্দুস সামাদ জানান, আমার এ অর্জনের পেছনে বাবা- মায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল। এরপরের স্থানই শিক্ষকদের। তারা আমাকে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করিয়েছেন। এছাড়া নিজেও সব সময় চেষ্টা করেছি। তাই আজ দেশের দুইটি সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। তবে কোথায় ভর্তি হবো তা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তারপর সিদ্ধান্ত নিবো। আমি সবার কাছে দোয়া কামনা করছি। যেনো ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারি।

ছেলের অর্জনের ব্যাপারে বাবা মো. সাইফউল্লাহ বলেন, ছোট থেকেই সামাদকে মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে শ্রম দিচ্ছি। আজ সে দেশের দুইটি সুনামধন্য বিদ্যাপীঠে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছে। এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে এখন আমার ছেলে যেকোনো একটিতে ভর্তি হবে। আশা করছি পড়ালেখা শেষ করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবে সামাদ। তার সাফল্যের জন্য সকলের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করছি।

শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন জানান, সে সত্যিই একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। আমাদের প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত অবস্থায় তাকে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করিয়েছি। এছাড়া ভালো কিছুর জন্য তাকে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেছি। এখন সে দেশের দুইটি সুনামধন্য বিদ্যাপীঠে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তার সমৃদ্ধ ভবিষ্যত কামনা করছি। পড়ালেখা শেষ করে সে দেশের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে বলে আশা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence