সাত কলেজে ৬শ, মেডিকেলে ১ হাজার, ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি ১১ হাজার

পরীক্ষার্থী
পরীক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

চলতি বছরের মেডিকেল ভর্তি আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল মাত্র ১০০০ টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের আবেদন ফি ছিল ৬০০ টাকা। মেডিকেলের ভর্তি প্রক্রিয়া অনেকটা বছরের শুরুতে শেষ হয়ে গেছে। আর সাত কলেজের ভর্তি কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। অন্যদিকে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা শেষে ভর্তি আবেদনের বিজ্ঞপ্তি এখনো প্রকাশিত না হলেও ফিসহ অনেক কিছুই চূড়ান্ত হয়েছে।

২২ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের গত বৃহস্পতিবারের (২৯ সেপ্টেম্বর) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি আগামী ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত হবে। এরপর ১৭ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি আবেদন শুরু হবে। গুচ্ছের কেন্দ্রীয় ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্যতা আলাদা হওয়ায় আবেদন পৃথক পৃথকভাবে নেয়া হবে। তবে মেধাতালিকা দেয়া হবে কেন্দ্রীয়ভাবে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রথম মেধাতালিকায় চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের আবশ্যিকভাবে ভর্তি হতে হবে। ভর্তি না হলে তার সেই আসন ফাঁকা ঘোষণা করা হবে। মেধাতালিকায় শিক্ষার্থীরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে সেখানে তাকে ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভর্তির সাথে তাকে তার সার্টিফিকেটগুলো জমা দিতে হবে। এরপর সে মাইগ্রেশনের সুযোগ পাবে।

ভর্তিচ্ছুরা বলছেন, গুচ্ছ কমিটি প্রথমে আমাদের সুুবিধার কথা বিবেচনা করে একটি আবেদনের মাধ্যমে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেছেন। কিন্তু সে সিদ্ধান্তে তারা থাকতে পারেননি। উল্টো ৫০০ টাকা করে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক পৃথক আবেদনের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: আবেদন ফি নিয়ে অসন্তোষ, পৃথক পৃথক মেধাতালিকার দাবি

তারা বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব এবং আর্থিক সাশ্রয় করা হয়। এবার ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। তবে আর্থিক ক্ষতি ঠিকই হচ্ছে। যাদের পারিবারিক অবস্থা ভালো না তারা পর্যাপ্ত ভর্তি আবেদন করতে পারবেন না। ফলে অনেকেরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।

আরকে আশিক খান নামে রাজশাহীর এক ভর্তিচ্ছু বলেন, সাত কলেজে মাত্র ৬০০ টাকায় পরীক্ষা নিয়ে সাবজেক্ট চয়েসও দিয়ে ফেলেছে। মেডিকেল কলেজগুলো মাত্র ১০০০ টাকায় ভর্তি পরীক্ষা সম্পূর্ণ করেছে। অন্যান্য গুচ্ছ কমিটি (কৃষি গুচ্ছ, ইঞ্জিনিয়ারিং গুচ্ছ) মাত্র একবার টাকা নিয়েই সব কাজ করে শেষ করতেছে। অন্যদিকে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে কেন ভর্তি পরীক্ষার জন্য ১৫০০ টাকা নেওয়ার পরও আবার আলাদা আলাদাভাবে প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০০ টাকা করে নিতে চাচ্ছে? যেটা সম্পূর্ণই অযৌক্তিক।

জয় রয় নায়েক নামে খুলনার এক ভর্তিচ্ছু বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার গুচ্ছে মার্ক ৫১.৭৫। এখন যদি গুচ্ছের সব ভার্সিটিতে আবেদন করি তাইলে টাকা লাগবে ১১ হাজার। এখন যদি কোন ভার্সিটিতে সাবজেক্ট আসলো না, ফাও আমার টাকাগুলো গেল। এমতাবস্থায় আমার পরিবারকে কি বোঝাবো? গুচ্ছের কাছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা আজ জিম্মি।

আরও পড়ুন: গুচ্ছের আবেদন ফি ১০০ টাকা করার দাবি, আন্দোলনের ঘোষণা

এর আগে, ২৮ ফেব্রুয়ারী থেকে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেলের ভর্তি আবেদন শুরু হয়। মেডিকেলে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মেডিকেলে ভর্তি আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০০ হাজার টাকা। আবেদন শেষ হয়েছে ১০ মার্চ। এরপর ০১ এপ্রিল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার ৪ দিন পর ০৫ এপ্রিল ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এরপর ১ আগস্ট থেকে মেডিকেলে ক্লাস শুরু হয়।

তথ্যমতে, দেশে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ১১৬টি। সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য আসনসংখ্যা ৪ হাজার ৩৫০। আর বেসরকারি ৭৩টি মেডিকেল কলেজে আসনসংখ্যা ৬ হাজার ৩৫৪। এছাড়া ৬টি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে আসনসংখ্যা ৪২৫।

সাত কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সাত কলেজের ভর্তি আবেদন শুরু হয় ১৫ জুলাই। ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলে এ আবেদন প্রক্রিয়া। সাত কলেজের ভর্তি আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬০০ টাকা। এরপর ১২ আগস্ট বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মধ্যদিয়ে সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর ১৯ আগস্ট বাণিজ্য এবং ২৬ আগস্ট কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ধারাবিকভাবে ইউনিটগুলোর রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। বর্তমানে সাত কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া কলেজ-বিষয় পছন্দক্রমের মধ্যে চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে, গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৩০ জুলাই। এরপর ১৩ আগস্ট ‘খ’ ইউনিটের এবং শেষে ২০ আগস্ট ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে শুরুতে ০৪ আগস্ট ‘ক’ ইউনিট এবং পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে বাকি ইউনিটগুলোর ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফল প্রকাশের দীর্ঘ বিরতীতে গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সভায় ভর্তি আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence