বেরোবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের পর অভিযোগকারীকে হুমকি

ড. তানজিউল ইসলাম (জীবন)
ড. তানজিউল ইসলাম (জীবন)  © সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম (জীবন)-এর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও ফলাফল কারসাজির (মার্ক টেম্পারিং) অভিযোগ করেছেন একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে গত শনিবার (৩ মে) দেওয়া লিখিত অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, অভিযোগ দাখিলের সময় তিনি তার পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ করার পরপরই অভিযুক্ত শিক্ষক তার ও তার পরিবারের সদস্যদের ফোন করে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এমনকি মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দেন।

লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থী আরও বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে অনুরোধ করেছিলাম যেন আমার পরিচয় গোপন রাখা হয়। কিন্তু শিক্ষক তানজিউল ইসলাম বিভিন্ন মাধ্যমে আমার পরিচয় জেনে গিয়ে আমার ও পরিবারের সদস্যদের একাধিকবার ফোন করেছেন। এক সাবেক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “শিক্ষক তানজিউল ইসলাম আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বিভিন্নজনের মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে পরিকল্পিতভাবে হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করছেন।”

এর আগে, ১৩ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষানিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

পরে ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক সাবেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের ইমেইলে একটি অভিযোগপত্র পাঠান। সেখানে তিনি তানজিউল ইসলামের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, যৌন হয়রানি ও মার্ক টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল খারাপ করে দেওয়ার অভিযোগ করেন।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক তানজিউল ইসলাম মধ্যস্থতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “১৪ এপ্রিলের পর থেকে আমি এ বিষয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা বলিনি। অভিযোগকারীর নামও আমার জানা নেই। কে বা কারা তাকে ফোন দিয়েছেন, তা আমার জানা নেই। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমি পরীক্ষানিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।”

তবে তিনি বলেন, “দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাকে হেয় করে বিচার করা হচ্ছে।”

তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানান, “আমরা নাম বা পরিচয় ফাঁস করিনি। ব্যক্তিগত ল্যাপটপ ব্যবহার করে গোপনীয়তা বজায় রেখে তদন্ত কাজ করছি। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।”


সর্বশেষ সংবাদ