ব্যবসা করে চালাতেন পড়ার খরচ, প্রতারণার ফাঁদে টাকা খোয়ালেন সেই শিক্ষার্থী

মো. ইমদাদুল হক
মো. ইমদাদুল হক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমদাদুল হক। নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য সন্ধ্যার পর রাস্তার পাশে লুঙ্গি বিক্রি করেন। ঈদের অধিক মুনাফা লাভের আশায় কুষ্টিয়া থেকে বাবাকে নিয়ে এসে একই ব্যবসা করতে থাকেন। তবে গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল বাবা ফাঁদে পড়ে ৩০ হাজার টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সোমবার (২৪ মার্চ) বিকালে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ঘুণ্টিঘর সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, গেন্ডারিয়া মসজিদের পাশে সাধনার গলির সামনে লুঙ্গি বিক্রি করছিল শিক্ষার্থীর বাবা। পরে একজন নারী একসঙ্গে ৩০-৪০টি লুঙ্গি কেনার কথা জানান। মানের লুঙ্গি কম থাকায় নারী আরো লুঙ্গি আনতে বলেন। পাশে থাকা একটি দোকানের একজন ছোট ছেলের কাছে লুঙ্গি রেখে আরো লুঙ্গি আনতে যান বাবা।

ফিরে এসে দোকান বন্ধ দেখেন। পরে ছেলেটি জানান, তাঁর কাছ থেকে ওই নারী লুঙ্গি নিয়ে চলে গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইমদাদুল বলেন, আমি সোমবারই গেন্দারিয়া থানায় জিডি করে আসি। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) পুলিশ নিয়ে দোকানে যাই। দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছেলেটি নিজ হাতে লুঙ্গি নারীর হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছেন, তারা ফুটেজ দেখে নারীকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।  

তিনি আরো বলেন, আমি ঋণ নিয়ে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ঈদের আগে ব্যবসা শুরু করি। ৩০-৩৫ হাজার টাকার মতো মালামাল নিয়ে গেছে। আমি কিভাবে কি করব, বুঝতে পারছি না। ঋণ কিভাবে শোধ করব বুঝতে পারছি না।

এ ব্যাপারে ইমদাদুলের সহপাঠী হোমাইরা বলেন, ইমদাদুল নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্যে সন্ধ্যার পরে রাস্তার পাশে লুঙ্গি বিক্রি করত। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় একটি প্রতারক চক্র ওর থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার লুঙ্গি নিয়ে যায়। ছেলেটা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে।

আমরা সবাই গ্রামে চলে এসেছি। তাই কেউ ওর কাছে যেতেও পারছি না। পুলিশের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত অপরাধীকে শনাক্ত করুন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাকরিম আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার আমরা ৪ জন ইমদাদুলকে নিয়ে গেন্ডারিয়া থানায় যাই। সেখান থেকে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সিসিটিভি ফুটেজ দেখি। সিসিটিভি ফুটেজ এবং দোকানে থাকা ছেলের কথাবার্তায় কিছু অসামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়।

তবে ঘটনা দেখে দোকানিকে দায়ীও করা যাচ্ছে না। তদন্ত কর্মকর্তা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ওসির সঙ্গে কথা বলবে। তারপর যদি কোনো ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়, সেটা জানানো হবে। তবে এই ব্যাপারটা নিশ্চিত নয়।


সর্বশেষ সংবাদ