কুবিতে প্রক্টরের উপস্থিতিতেই হামলা, হাসপাতালে ৯ শিক্ষার্থী 

পুলিশের সাথে সংঘর্ষ
পুলিশের সাথে সংঘর্ষ  © টিডিসি ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে পুলিশ। এতে একাধিক গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ২০ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে নয়জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপর হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী নীরব ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার উদ্দেশ্যে বের হলে পুলিশের বাঁধায় এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশ ও ডিবির প্রায় শতাধিক সদস্য শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিতে গেলে প্রথমে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর আবাসিক হল ও মেসের প্রায় সাত-আটশ শিক্ষার্থী এসে যুক্ত হয়ে পুলিশের বাঁধা অতিক্রম করে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে। এরপর শর্টগান দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলির পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ করে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করে। পরবর্তী পুলিশের আঘাতে আমাদের সময়ের সংবাদদাতা অনন মজুমদার, দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদদাতা মানছুর আলম অন্তরসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত। পরে তাঁদের এম্বুলেন্স যোগে  কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠানো হয়।

এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে মহাসড়কে এসে জড়ো হয়। পরে তাঁরা ধিক্কার ধিক্কার প্রশাসন ধিক্কার, প্রক্টরের চামড়া তুলে নেব আমরা, আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই' সহ নানা স্লোগান দিয়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান।

এদিকে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার পর প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী আন্দোলনে যোগ দেন এবং পুলিশি বাঁধা ঠেলে মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমরানুল হক মারুফ বলেন, প্রতিদিন এভাবে রাস্তা ব্লক করে রাখা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তাই আমরা আজ শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিয়েছি। শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ বিষয়ে আমরা পরে ব্যবস্থা নেব। 

কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে আমরা কথা বলবো।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. রনি বলেন, আমাদের এখানে সর্বমোট ৯ জন আহত অবস্থায় এসেছে। এর মধ্যে ৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি। ৭ জনের অবস্থাও অতটা খারাপ নয়, তারাও মোটামুটি ভালো আছে। আগামী ২৪ ঘন্টা আমাদের পর্যবেক্ষণে থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, পুলিশের যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবো। এখানে আমার কোন ইন্ধন নেই।

 

সর্বশেষ সংবাদ