জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিটি কলেজে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে চাই: উপাচার্য

  © জনসংযোগ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিটি কলেজে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেছেন, আমাদের সকল শিক্ষককে উচ্চতর প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তারা যেন নিজেদেরকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারে। শিক্ষকরা যোগ্য হলেই তারা দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি করতে পারবেন। 

শনিবার (১ জুন) মুন্সিগঞ্জে ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) আয়োজিত শিক্ষকদের নিয়ে এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য। 

উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, কোভিডের সময়ে সারা বিশে^র মতো আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম থমকে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা  বসে থাকিনি। অনলাইনে শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং ক্লাসগ্রহণ অব্যাহত রেখেছি। শিক্ষকদের সহায়তায় সাড়ে সাত হাজার ক্লাস অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। এভাবে আমাদের শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। 

তিনি বলেন, শুধু শ্রেণিকক্ষে ক্লাস গ্রহণ করেই একজন আদর্শবান শিক্ষক বসে থাকেন না। একজন শিক্ষককে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। তিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্য চিন্তা করেন, কাজ করেন। আমরা শিক্ষকদের দক্ষ করে তুলতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু করেছি। এরপর আমরা অনুধাবন করতে পারলাম আরও দু’টি বিষয় যুক্ত করা প্রয়োজন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্যাডাগোজি এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করলাম। এভাবে দক্ষ জনবল তৈরিতে শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করে চলেছি আমরা। 

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ হাজার শিক্ষককে নানা মেয়াদে প্যাডাগোজি এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। বাকী শিক্ষকদের পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসব। আমরা প্রতিটি কলেজে প্রশিক্ষণকে ছড়িয়ে দিতে চাই। আপনারা যা শিখবেন সেটিকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন। নতুন যে বিষয় শিখছেন সেটিকে আপনার অন্য সহকর্মীকে শেখান। প্রত্যেকটি কলেজকে প্রশিক্ষণের দুর্গে পরিণত করুন। প্রত্যেকটি কলেজকে প্রশিক্ষণের আলোয় আলোকিত করুন। যদি সেটি সম্ভব হয় আস্থা রাখুন- একেকটি কলেজের পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে পাল্টে যাবে। 

উপাচার্য আরও বলেন, আপনারা মনে করবেন না বড় ভবন পাওয়া মানে কলেজের সুনাম বৃদ্ধি পাওয়া। বরং প্রতিষ্ঠান যতোই জীর্ণ-শীর্ণ থাকুক না কেন যদি ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানবিক, সৃজনশীল, দেশপ্রেমিক, সমৃদ্ধ চেতনা এবং আলোকিত একটি প্রজন্ম হিসেবে গড়ে ওঠে তাহলেই প্রতিষ্ঠানের সুনাম দেশব্যাপী ছড়িয়ে যায়। আর সেটি ঘটে পাঠদানের মধ্য দিয়ে। ভবন অপরিহার্য সেটি সত্য। তবে ভবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আলোকিত শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর ভাব বিনিময়। 

শিক্ষক প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমি বিশ্বাস করি- আজকের প্রশিক্ষণে আপনাদের দু’দল স্কলারের মধ্যে ভাব বিনিময় হবে। এর মধ্যদিয়ে আপনারা শানিত হবেন। আরও সমৃদ্ধ হবেন। এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য আমরা আমাদের প্রজন্মকে গড়ে তুলতে চাই। ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীদের যদি আপনাদের যত্নে বড় করা যায় তাহলে মানবিক বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে। আমাদের সন্তানেরা যেন দুর্নীতিবাজ না হয়।  তারা যেন গভীরভাবে দেশপ্রেমিক হয়। অন্যথায় আমাদের উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে। দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ বেশি দূর যেতে পারে না। টেকসই সমাজ বিনির্মাণে সুনাগরিক তৈরির কোনো বিকল্প নেই, যেখানে শিক্ষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।  

অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজের রেক্টর প্রফেসর ড. এম মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিইডিপির উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) আবদুর রহমান, সিইডিপির এসপিও প্ল্যানিং প্রফেসর ড. এ কে এম খলিলুর রহমান প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ