বোনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন কলেজছাত্রী প্রিয়ন্তী
বেইলি রোডে আগুন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৪, ০৪:০০ PM , আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪, ০৪:০৫ PM
কানাডা থেকে ফেরা বোনের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা গিয়েছিলেন মুন্সীগঞ্জের কলেজছাত্রী জারিন তাসনীম খান প্রিয়ন্তী। কিন্তু বেইলি রোডের রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে তিনি ফিরছেন লাশ হয়ে।
মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি সম্মান শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রিয়ন্তী সদর উপজেলার বিনোদপুরের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন খানের মেয়ে।
প্রিয়ন্তীর বড় বোন তাসনোভা খান সুহা বুধবার সন্তান সায়মাসহ কানাডা থেকে ঢাকায় আসেন। তাই বাবা-মা মেহেরুন্নেসা ও বড় ভাই সাজেদ হোসন পিয়ালের সঙ্গে ঢাকার ইস্কাটনে যান প্রিয়ন্তী ।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বড় বোন সুহা তাকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁয় নিয়ে গিয়েছিলেন ডিনার খাওয়াতে। সঙ্গে ছিল সুহার মেয়ে ও মামী শাশুড়ি। কিন্তু আগুন লাগার পর অন্য তিনজন বের হতে পারলেও পারেননি প্রিয়ন্তী।
প্রিয়ন্তীর ভাই সাজেদ হোসন পিয়াল জানান, আগুন লাগার পর রেস্তোরাঁটি ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। তার দুই বোন ঘাবড়ে গেলেও ঘটনার পরপরই সাড়ে চার বছরের সায়মাকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান সুহার মামী শাশুড়ি।
“আর সুহা ছোট বোন প্রিয়ন্তীকে হাতে ধরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভবনের উপর থেকে সিড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে লোকজন নামছিল, আর ধোয়ায় মধ্যে এক পর্যায়ে প্রিয়ন্তীর হাতটি ছুটে যায়। পরে সে আর বের হতে পারেনি।”
সদ্য এলএলবি পাস করা পিয়ালও বোনের সঙ্গে ঢাকা গিয়েছিলেন। কিন্তু মর্মান্তিকভাবে হারানো বোনের দাফনের ব্যবস্থা করতে বাড়ি ফিরে এসেছেন। পরে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে বাদ আসর দাফনের সময় নির্ধারণ করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকায় প্রিয়ন্তীর মরদেহের সঙ্গে বাবা, মা ও বড় বোন রয়েছেন। সেখানে গোসল করানোর পর কফিন নিয়ে আসতে আসতে কিছুটা বিলম্ব হবে।
এদিকে প্রিয়ন্তীর মৃত্যুর খবর মুন্সীগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠী, শিক্ষক ও স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনরা তাদের বিনোদপুরের বাড়িতে ভিড় করেন। এলাকার মানুষ অপেক্ষায় আছেন ঢাকা থেকে তার মরদেহ আসার।
শহরের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহমেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে প্রিয়ন্তী এইচএসসি পাস করেছিলেন। তার সাবেক এই শিক্ষালয়টি ঘিরেও শোকের ছায়া।
তার স্বজন ও সহপাঠীরা কেউই এই করুণ মৃত্যু সহ্য করতে পারছেন না। তারা বলছেন, প্রিয়ন্তীর সোনালী স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আর কান্নার সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে প্রিয়জনদের।