জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো পার করছি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংহতির ধারকবাহক পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’ জারির মাধ্যমে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর থেকে চালু হয় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। আগামী শুক্রবার (২০ অক্টোবর) তারুণ্যের ১৮ বছর পেরিয়ে ১৯তম বছরে পদার্পণ করবে।

ক্যাম্পাসের নানা ধরনের সংকট এবং সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যাপক আগ্রহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতির কথাগুলো তুলে ধরেছেন সাগর হোসেন।

জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো পার করছি এই ক্যাম্পাসে
শুভ জন্মদিন আমার প্রাণের ক্যাম্পাস’। ভালোবাসার আরেক নাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে মায়া আর ভালোবাসা। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল জগন্নাথ  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রিয় বিষয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ নিয়ে পড়ছি। জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো পার করছি।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস মানেই অন্যরকম উন্মাদনা, আবেগ, অনুভূতি। নানান রকমের সাজ সজ্জায় নাচে গানে পুরা ক্যাম্পাসেই ঈদের আমেজ লেগে থাকে। এবার ১৯ তারিখে দিনটি পালিত হবে।বন্ধুরা সবাই একসাথে ক্যাম্পাসে যাবো এবং দিনটি উদযাপন করব। রাতে মনের মানুষ এবং স্বপ্নবাজী ব্যান্ডের বিশেষ কনসার্ট আছে। সেখানে সবাই একসাথে নাচবো-গাইবো।

আশা করছি আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে। নতুন ক্যাম্পাস পাবো কিনা জানি না, তবে জবি আমাদের একটা শিক্ষাবান্ধব ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ উপহার দেবে এতটুকুই প্রত্যাশা।

মিজানুর রহমান
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

সংকট কাটিয়ে নতুন ক্যাম্পাস দ্রুতই বাস্তবায়িত হোক
ভোরের আকাশে হালকা কুয়াশা, কাক ডাকা ভোরে শিশিরে ভেজানো মাঠ-ঘাট, শিউলির সুগন্ধে মন মাতানো পরিবেশে প্রকৃতিতে যখন হেমন্তের আবির্ভাব, ঠিক তখনি প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম বর্ষে পদার্পণ। সাড়ে ৭ একরের ছোট এই ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখে দেশের হাজারো শিক্ষার্থী।

প্রতিবছর নবীনদের আপন করে নিয়ে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠানটির যে অবদান রাখছে তা অতুলনীয়। বর্তমান ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংকটাপন্ন অবস্থাকে কাটিয়ে উঠে নতুন ক্যাম্পাস আশা করছি খুব দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি গর্বিত। গর্বিত করতে চাই আমার ক্যাম্পাসকেও। ষড়ঋতুকে ক্রমান্বয়ে অতিক্রম করে এতদূর যার পথচলা সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মুখরিত হয়ে উঠুক এর পরিবেশ, আনন্দপূর্ণভাবে দিবসটি উৎযাপিত হোক এই কামনাই করছি।

মুরশিদা রহমান
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

নিজস্ব গতিতে জবি এগিয়ে যাবে
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজ ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’ পাস করার মাধ্যমে একটি পরিপুর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রুপ নেয়। শুরু থেকেই নানা সংকটের মধ্যে থাকলেও অতি অল্প সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয় দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।

আরও পড়ুন: জবিতে দূর্গা পূজার ছুটি ২২ অক্টোবর থেকে

নানা দাবি আদায়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে বারবার। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যেই এটি পরিণত হয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আলয়ে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে জ্ঞানের এই মহাসমাবেশে অংশীদার হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে তার নিজস্ব গতিতে, ছড়াবে আলো। ১৯তম জন্মদিনে এই কামনা করি।

নাফিজ উদ্দিন
ফিন্যান্স বিভাগ

ঈদ-পূজার মতো বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের জন্য অপেক্ষ করি
আমরা ঈদ-পূজা পালন করার জন্য প্রতি বছর যেভাবে মুখিয়ে থাকি—অপেক্ষা করতে থাকি কখন ঈদ আসবে। সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা যেভাবে অপেক্ষা করে কবে পূজা আসবে, ঠিক সেইভাবে প্রতিটা শিক্ষার্থী অপেক্ষায় থাকে কবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আসবে। কবে আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থী আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবে।

ছোট ক্যাম্পাস হওয়ার কারণে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা সেগুলো না পেলেও এইদিন পালনের মধ্যে দিয়ে সবার আক্ষেপ কিছুটা হলেও কমে যায়। ছোট এই আঙিনায় নিজেদের মত করে রাঙিয়ে তুলে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী। প্রতিবছর নতুন ও আরো সুন্দরভাবে এগিয়ে যাক প্রাণের বিস্ববিদ্যালয়। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা দিয়ে আরো বড় করে আত্মপ্রকাশ করুক।

রিয়া ধর 
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক স্বপ্নভূমির নাম
কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া দেশের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। মুক্তিযুদ্ধ পূববর্তী এবং পরবর্তী নানান আন্দোলনের সাক্ষী এই বিদ্যাপীঠ। আমার কাছে এখন এটাই এক স্বপ্নভূমির নাম। ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার এই প্রতিষ্ঠানটি সগৌরবে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধারণকে নিজেদের স্বাতন্ত্র্যতা জানান দিচ্ছে।

আমি আশাবাদী, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ভাষা শহীদ রফিকের মতো দেশপ্রেমিক, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া কালজয়ী পুরুষ বঙ্গতাজের মতো রাজনীতিবিদ, ব্রিটিশ চ্যানেল পাঁড়ি দেওয়া একমাত্র বাঙালি ব্রজেন দাশের মতো সাহসী পুরুষ এবং ক্ষণজন্মা সৈয়দ শামসুল হকের মতো কথা সাহিত্যিকদের বিচরণভূমি হোক এই জগাবাবুর প্রতিষ্ঠানটি।

মুহাম্মদ মইন উদ্দিন হাসান 
নৃবিজ্ঞান বিভাগ


সর্বশেষ সংবাদ