হত্যা মামলার আসামিকেই সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দিল কুবি প্রশাসন
- কুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৫৩ PM , আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:০৫ PM
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার আসামি রেজাউল ইসলাম মাজেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯তম সিন্ডিকেট সভায় তার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এই নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় এক সিন্ডিকেট সদস্য তাঁর নিয়োগে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) দিয়েছেন। একাধিক সিন্ডিকেট সদস্যের সাথে কথা বলে বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নিয়োগ পাওয়া রেজাউল ইসলাম মাজেদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর আগেও খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার একাধিক আসামিকে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কুবি কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত ১৫ মে সেকশন অফিসারের বিপরীতে রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ আরও কয়েকজনের মৌখিক পরীক্ষা নেয় নিয়োগ বোর্ড। সভায় একক কোনো প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় ৩ জন প্রার্থীকে নিয়ে প্যানেল তৈরি করে বিষয়টি সিন্ডিকেটে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে গত ৪ অক্টোবর নিয়োগ বোর্ডের সভা বিবরণীর স্বাক্ষরের জন্য বোর্ড সদস্য উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবিরকে পাঠালে তিনি শুধু একজনের সুপারিশ দেখতে পেয়ে সেখানে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর আজ সোমবার বিষয়টি সিন্ডিকেটে নেওয়া হলে সেখানেও তিনি আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) জানান। যদিও এসব বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সরাসরি কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, প্রক্রিয়াটি ঠিকমতো সম্পন্ন হয়নি, এটিই আমার দ্বিমতের কারণ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিন্ডিকেট সদস্য জানান, মাজেদের বিষয়ে সভায় একটি নোট অব ডিসেন্ট এসেছে। তবে এ বিষয়ে মাইনোটস (সভা বিবরণী) আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।
রেজাউল ইসলাম মাজেদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০১৬ সালের ১ আগস্ট ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে নিহত হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ। এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মাজেদ। মাজেদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ছাড়াও নিজ দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর, বিভিন্ন সংগঠনে হস্তক্ষেপ, উপাচার্যের গাড়ি রোধসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে মাজেদের নিয়োগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার। তিনি বলেন, আমার ছেলের রক্তের উপর দিয়ে এখানে সবাই ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হন। প্রশাসন এখন পর্যন্ত কী করছে। একের পর এক আসামিদেরকে চাকরি দিয়ে যাচ্ছে। তবে চাকরি হওয়ায় মাজেদ এখান থেকে সরে যেতে পারবে না। একবার না একবার তাকে আমি বিচারের আওতায় আনবোই।
মাজেদের নিয়োগসহ সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।