‘গতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে’: হাবিপ্রবি উপাচার্য

হাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান
হাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান  © টিডিসি ফোটো

গতিশীল শিক্ষার সাথে খাপ খাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিয়ে এগিয়ে নিতে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) হাবিপ্রবি’র ২৫ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এক বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন নতুন ভাবনা আমরা অবশ্যই প্রয়োগ করতে চাই। বিজ্ঞান একটি গতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থা। তাই গতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থার সাঙ্গে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষকমন্ডলী, কর্মকর্তা, কর্মচারী প্রত্যেকের আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

উপাচার্য আরও বলেন, যে লক্ষ নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিলো সেই যাত্রার ধারাবাহিকতায় আজ আমরা ২৫ বছরে পা দিয়েছি। সেই চেষ্টার ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১৩০৯ জন গ্র্যাজুয়েট, ৪০৩২ জন এমএস,এমএসসি গ্র্যাজুয়েট ও ৬৪ জন পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকেএগিয়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যে আমরা নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় হাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। এদিন সকালে প্রশাসনিক ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান। পরে তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এর সামনের মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এসময় বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা ওড়ানো হয়। 

ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বাদ জোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল, সকাল সাড়ে ১০টায় দিনব্যাপী ফ্রী ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচি, ১০টা ৪৫ মিনিটে রোলার স্কেটিং প্রদর্শনী, সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে ‘অগ্রযাত্রায় হাবিপ্রবির ২৫ বছরে পদার্পণ’ শিরোনামে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ফ্ল্যাশ মব, বিকেল ৩টায় সাংস্কৃতিক নৃত্য গানে অগ্রজ ও অনুজদের মধ্যে প্রতিযোগিতা,  বিকেল সাড়ে ৫টায় টিএসসির মুক্তমঞ্চে তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
 
বাংলাদেশের ২য় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এটি উত্তর বাংলার সেরা বিদ্যাপীঠ যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে শীর্ষস্থানীয়। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন এই বিদ্যাপীঠে।

তেভাগা আন্দোলনের নেতা দিনাজপুরের সন্তান হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে এর নামকরন করা হয়। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (AETI) হিসেবে যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করতো। 

১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত কলেজ ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। এটিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষে “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প” গ্রহণ করা হয়। 

৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করা হয়। ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৬ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড: মো: মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। বর্তমানে ৭ম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান।


সর্বশেষ সংবাদ