২০ বছর পর শিক্ষা ব্যবস্থা কোন দিকে যাবে কেউ জানে না: ভিসি মশিউর

প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান
প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান  © ফাইল ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, আমরা ব্লেন্ডেড এডুকেশনের দিকে যাচ্ছি। আগামী ২০-৫০ বছরের পরে শিক্ষা ব্যবস্থা কোন দিকে যাবে আমরা কেউ জানি না। ফিজিক্যাল স্ট্রাকচার আদৌ প্রয়োজন হবে কিনা সেটি ভাবনার বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের মাস্টার প্ল্যান করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সেই মাস্টার প্ল্যানও আগামী ৫০ বছরকে সামনে রেখে করলে হবে না। কারণ সময় খুব দ্রুত পাল্টে যায়। শিক্ষা এবং শিক্ষা উপকরণসহ যাবতীয় ব্যবস্থাপনা ঠিক ২০ বছর পরে কোথায় গিয়ে নতুন শেইফ নিবে তা আমার কেউ জানি না। সুতরাং টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

আজ বুধবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) এর অধীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের ৩০তম ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের সকল শিক্ষার্থীর ই-বুক, ই-জার্নাল ও ই-লাইব্রেরি একসেস নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়ে উপাচার্য আরও বলেন, ডিজিটাল সকল সুবিধা আমরা শিক্ষার্থীদের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। যাতে তারা সহজেই লার্নিং ম্যাটেরিয়ালস এর সুবিধা ভোগ করতে পারে। একারণে আমরা গোটা লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এলএমএস) ডিপিপি নিয়ে কাজ করছি। এটি চূড়ান্ত হয়ে গেলে শিক্ষায় বড় পরিবর্তন আসবে। ইতোমধ্যে আমরা গুগল ওয়ার্কস্পেইস ফর এডুকেশনের আওতায় ৪ লক্ষ শিক্ষার্থীকে নতুন অফিসিয়াল ই-মেইল আইডি দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সকলকে এই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, বাঙালির আত্মশক্তি বা আত্মবিকাশের পিছনে প্রতিটি মানুষের অনুপ্রেরণা থাকে, সামর্থ্য থাকে, দক্ষতা থাকে। নতুনকে গ্রহণের সাহস থাকে, প্রত্যয় থাকে। এটি সত্যিকার অর্থেই বাঙালির বড় রকমের বৈশিষ্ট্য। যে কারণে স্বাধীনতার ৫০ বছরে নানা বাস্তবতা, অগণতান্ত্রিক পথ ও সামরিক শাসনের যাঁতাকল পেরিয়েছি। তদুপরি আমরা যতটুকু সময় মুক্তবুদ্ধি চর্চার জন্য পেয়েছি, তার মধ্যে আমরা সেটিকে অগ্রসর করতে পেরেছি। অনেকে হতাশার কথা বলেন, নেতিবাচক কথা বলেন। আমি সব সময় বাংলাদেশের সম্ভাবনার পক্ষে। বাংলাদেশের শক্তিমত্তার পক্ষে। বাঙালির বীরত্বের পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে আমাদের আত্মশক্তি, আত্মমর্যাদা, আত্মসম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টিতে ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছে। দু’ লক্ষ মা-বোনের নির্যাতনের বদলে যখন পতাকা নির্মিত হয় সেই দেশ অসীম সাহসে এবং অসীম সম্ভাবনায় ভরে উঠবে- এ আমার দূঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে যাচ্ছে। শিক্ষার বিকাশের পথে যাচ্ছে।

শিক্ষকদের উদ্দেশে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, আপনারা যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে কলেজে ফিরে যাচ্ছেন অর্জিত জ্ঞান অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিন। নতুন নতুন প্রস্তাবনা তৈরি করুন। কলেজ কেন্দ্রিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ আয়োজন করুন। বাজেট পেশ করুন। আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আমরা চাই সারা দেশের কলেজ যেন প্রশিক্ষণের আওতায় চলে আসে। আঞ্চলিক পর্যায়ে কাজগুলো ছড়িয়ে পড়লে আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। 

বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের এই ব্যাচের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গত ৯ মার্চ থেকে শুরু হয়। এই প্রশিক্ষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের মোট ১৬০ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। ২৮ দিনব্যাপী চলা প্রশিক্ষণের আজ ৫ এপ্রিল ছিল সমাপনী দিন। এই সমাপনী অনুষ্ঠানে স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার, সিইডিপির প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি) মোহাম্মদ খালেদ রহিম। 

এছাড়া এই প্রশিক্ষণে আরো বক্তব্য প্রদান করেন ৩০তম ব্যাচের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কোর্স উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সেলিম ভুঁইয়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কোর্স উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী, দর্শন বিভাগের কোর্স উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের কোর্স উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির। এছাড়া সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক মো. হাছানুর রহমান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence