নীতিমালা প্রণয়নে শিগগির ঘোষণা নতুন কমিটি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালু নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান কী?

প্রতীকী ছবি ও ইউজিসি লোগো
প্রতীকী ছবি ও ইউজিসি লোগো  © টিডিসি ফটো

দীর্ঘ আলোচনা পর্যালোচনার পর চলতি বছরের শুরুতে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নেয় উচ্চশিক্ষার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ইউজিসি একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের জন্য করতে ৬ সদস্যের একটি গঠন করে দেয়।

যদিও ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এই উদ্যোগ নিয়ে কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি চালু করতে নতুন আরেকটি আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। ফলে থাকছে না আগের কমিটির কার্যকারিতা। পুরোনো কমিটির সদস্যদেরও কোনো খোঁজ নেই। ইতোমধ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নতুন নিয়োগ হয়েছে। ফলে আগের কমিটিকে অফিসিয়ালি বিলুপ্ত করা না হলেও এটি এখন বিদ্যমান নেই।

জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর প্রস্তাবনা অনুমোদন দেয় কমিশনের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। সেই আলোকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম পরিচালনায় নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন হয়। ওই কমিটি নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি প্রোগ্রাম পরিচালনার সার্বিক রূপরেখা নির্ধারণ করার কথা ছিল।

ইউজিসির পুরোনো সেই কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন বেসরকারি গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহ। তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিগত সরকারের আমলে কমিটি গঠনের পর কোন মিটিং হয়নি। তারপর দেশের অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন ইউজিসির নতুন প্রশাসন যেভাবে চাইবেন বিষয়টি সেভাবে আগাবে। তারা নতুন করে ভাবতও পারেন, চাইলে আগের কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি নিয়েও কাজ করবে। ফলে আমাদের উদ্যোগ আর এখনকার উদ্যোগে কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। এটা সম্পূর্ণ ইউজিসির উপর নির্ভর করবে।

ইউজিসির প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা পুরো প্রক্রিয়াটিকে রিভিউ করছি। নতুন করে একটি কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুইজন প্রতিনিধি এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন প্রতিনিধি রয়েছেন। এছাড়া ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তিনজন প্রতিনিধি রয়েছেন। 

তিনি যোগ করেন, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনেক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির প্রশংসনীয় সক্ষমতা রয়েছে। তাদের অসংখ্য ফ্যাকাল্টি রয়েছেন, যারা বৈশ্বিক পরিসরে সুনামের সাথে পিএইচডি গাইড করছেন। ফলে উচ্চশিক্ষায় আমরা তাদের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই  

কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি কি বলতে চায়? প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি যে বলছে তারা পিএইচডি চালুর সক্ষমতা রাখেন সেটা নিয়ে পাবলিক ইউনিভার্সিটির মতামত কি? পাশাপাশি পিএইচডি নিয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রক্রিয়া নিয়ে যাচাই বাছাই করে মতামত জানাবে গঠিত কমিটি। 

তিনি আরও বলেন, পিএইচডি চালু সংক্রান্ত আগের যে কমিটি গঠিত হয়েছিল সেটার কার্যক্রম থাকছে না, নতুন কমিটি গঠনের পর ইউজিসির পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে গঠিত কমিটির মতামতকে প্রাধান্য দিতে চাই। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর টোটাল আলাপকে আমরা পুনর্বিবেচনা করতে চাই। 

আহ্বায়ক কমিটিতে যারা থাকছেন

বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) ডিগ্রি চালু করতে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে সরকার পতনের পর নতুন করে আরেকটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইউজিসির একটি সূত্র জানায়, ৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটির ঘোষণা আসছে শিগগির। 

ইউজিসির সূত্রটি জানায়, নতুন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে থাকছেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং সদস্য সচিব হিসেবে ডিরেক্টর ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূইয়াকে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও কমিটিতে থাকছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির (এপিইউবি) সভাপতি ড. মো. সবুর খান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি অথবা উপরস্থ একজন কর্মকর্তা। 

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ইউজিসির সূত্রে জানা যায়, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিযুক্ত সদস্যের নাম চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এ সংক্রান্ত সভার আয়োজন করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্ধারণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ