তরুণদের স্বপ্নের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে সেতুবন্ধন করছে ইউআইইউ’র সিডিআইপি
- খাঁন মুহাম্মদ মামুন
- প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ PM , আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ PM
বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে পড়াশোনা সম্পন্ন করা তরুণদের অনেকেই সঠিক নির্দেশনার অভাবে তাদের স্বপ্নের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারেন না। শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পড়াশোনা শেষ করলেই অনেকক্ষেত্রেই ঘাটতি থেকে যায় বাস্তব দুনিয়ার নানা খুঁটিনাটি। ফলে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা থাকলেও তুলনামূলক কম সুযোগ হয় দেশের তরুণ চাকুরি প্রার্থীদের।
তবে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে চিত্রটা ভিন্ন। দেশের অন্যতম এ উচ্চশিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালস (সিডিআইপি)। যেখানে শিক্ষার্থীরা বাজার চাহিদার নানা চাওয়াগুলো কর্পোরেট দুনিয়ায় প্রবেশের আগেই উপলব্ধি করার সুযোগ পান।
এখনকার তরুণদের জন্য বাজার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠতে শুধুমাত্র অ্যাকাডেমিক পড়াশোনা যথেষ্ট নয়। সেজন্য তরুণদের জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ—ড. সুমন আহম্মেদ, পরিচালক, সিডিআইপি, ইউআইইউ।
ইউআইইউ’র সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালস (সিডিআইপি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখানে তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের স্বপ্নের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের দিক-নির্দেশনা পান। তবে ইউআইইউ ছাড়াও এখানে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।
সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসে (সিডিআইপি) শিক্ষার্থীরা ভর্তির পর শুরুতেই তাদের পছন্দের কর্মক্ষেত্রে বিষয়ে চাকুরি পাওয়ার উপযোগী করে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) তৈরি করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের পছন্দ মতো বিভিন্ন বিশেষায়িত কোর্স সম্পন্ন করা হয়।
মানসম্মত উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি ইউআইইউতে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে উন্নত পরিবেশও। ফাইল ছবি।
এখানে ভর্তি হওয়ার চার থেকে ছয় মাসের মধ্যেই একজন শিক্ষার্থী তার প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারে এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের উপযোগী হয়ে ওঠেন। সিডিআইপি থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের এখান থেকেই বিভিন্ন সম্ভাব্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরির জন্য মনোনীত করে তাদের জীবনবৃত্তান্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হয়।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসে (সিডিআইপি) ইন্সট্রাক্টর হিসেবে রয়েছেন পারভেজ হোসাইন। তিনি নিজেও এ সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। প্রশিক্ষণ শেষে বর্তমানে তিনি ব্র্যাক আইটিতে সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (একিউএ) পদে কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি এখানে ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি গবেষণার বাতিঘর ইউআইইউ’র সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ
জানতে চাইলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘আমরা এখানে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগগুলো সম্পন্ন করে থাকি। এখানে কোনো শিক্ষার্থী আসলে প্রথমের তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করি এবং সে অনুযায়ী তার জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) প্রস্তুত করি। এরপর শিক্ষার্থীর স্বপ্ন এবং বাস্তবতার নিরিখে একটি বিষয়ে আমরা তার দক্ষতা উন্নয়নে জোর দেই। এর মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বাজার উপযোগী হয়ে উঠতে পারেন। সেজন্য আমাদের এখানে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ রয়েছে।’
ইউআইইউ’র সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসে (সিডিআইপি) মূলত—জাভাস্ক্রিপ্ট ফান্ডামেন্টাল, পিএইচপি: বেসিক টু অ্যাডভান্স, প্রফেশনাল ইউআই/ইউএক্স ডিজাইন, মাস্টারিং পাওয়ার বিআই, সফটওয়্যার টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স, ডাটা ইঞ্জিনিয়ারিং উইথ পাইথন অ্যান্ড মেশিন লার্নিং, ডাটা এনালিটিক্স উইথ পাইথন অ্যান্ড পাওয়ার বিআই, ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট উইথ লাভারেল অ্যান্ড রিয়্যাক্টসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি স্ববিস্তারে পড়ানো হয় শিক্ষার্থীদের।
মানসম্মত উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি ইউআইইউতে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে উন্নত পরিবেশও। ফাইল ছবি।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসে (সিডিআইপি) প্রশিক্ষণার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে রয়েছে দক্ষ ইনসট্রাক্টরা। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এখানে প্রশিক্ষণার্থীরা হালনাগাদ সব প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন। আর প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীরা সার্টিফিকেট পাবেন ইউআইইউ থেকে।
সিডিআইপি থেকে গত সাত বছরে এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে যে সকল শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি এবং সিডিআইপির প্রশিক্ষণ সফলতার সাথে শেষ করেছেন, শতভাগ শিক্ষার্থীই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের বুনিয়াদ গড়তে সক্ষম হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাজার উপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে অনন্য ইউআইইউ’র স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালস (সিডিআইপি) থেকে বর্তমানে ‘অলিও’তে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করতে যাচ্ছেন ফাহাদ আল ইসলাম । এখানে প্রাপ্ত প্রশিক্ষণের ফলে তার কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পথ সুগম হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গল্প-আলাপে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এখানে আমার প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নে করণীয় বিষয়গুলো জোর দিয়ে শেখানো হয়েছে। এটি আমাদের জন্য অনেক বেশি সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসে (সিডিআইপি) শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে প্রাযুক্তিক বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে রয়েছে অত্যাধুনিক হাই কনফিগারেশনের কম্পিউটার ল্যাব। এসব ল্যাবে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ পান।
আরও পড়ুন: এমআইটি-হার্ভার্ডের মতো গবেষণাগারের সুযোগ ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে
এখন পর্যন্ত সিডিআইপি থেকে ৩ শতাধিকের বেশি দেশি এবং বিদেশি নামকরা প্রযুক্তি সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চাকরির সরাসরি বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এর আগে এসব শিক্ষার্থীরা সিডিআইপি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
২০১৬ সাল থেকে যাত্রা শুরুর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসকে (সিডিআইপি)। এখন পর্যন্ত সাফল্য ধারায় দেশে বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট খাতে তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এতে যাবতীয় সহায়তা অব্যাহত রেখেছে ইউআইইউ কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: পরিশ্রম ও শৃঙ্খলাময় পড়াশোনায় সোনা মোড়ানো সাফল্য তাদের
বর্তমানে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব আইটি প্রফেশনালসের (সিডিআইপি) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. সুমন আহম্মেদ। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের এ সদস্য, তিনি জানান, তরুণদের কর্মক্ষেত্রে সফলভাবে প্রবেশ করানোর স্বপ্ন থেকেই তারা এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ড. সুমন আহম্মেদ মনে করেন, এখনকার তরুণদের জন্য বাজার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠতে শুধুমাত্র অ্যাকাডেমিক পড়াশোনা যথেষ্ট নয়। সেজন্য তরুণদের জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ। তরুণদের স্বপ্নের সাথে সন্ধি বা সেতুবন্ধন করতে সিডিআইপি যাবতীয় আয়োজন নিয়ে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।