তালিকা জটিলতায় আটকে আছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন 

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের লক্ষ্যে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) সাবেক শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা করার কাজ তিন মাসেও সম্পন্ন হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলা সমাবর্তন প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হচ্ছে। গত বছরের ১২ অক্টোবর ইউজিসি থেকে গবির চতুর্থ সমাবর্তনের জন্য অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। এরপর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সে তালিকা সম্পন্ন করে জমা দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

তথ্যমতে, ২০১৪ সালের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সমাবর্তন আয়োজন সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ প্রক্রিয়ায় বাঁধা হিসেবে কাজ করেছে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুপস্থিতি। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত উপাচার্য ছিল না। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর উপ-উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।

২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড তাকে উপাচার্যের চলতি দায়িত্ব দেয়। সর্বশেষ সব প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল উপাচার্য হিসেবে হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের পর থেকেই তিনি সমাবর্তনসহ বেশকিছু বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এরই অংশ হিসেবে সমাবর্তনের কাজ চলমান। তবে ধীরগতি নিয়ে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা।

২০১৪ সালের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সমাবর্তন আয়োজন সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ প্রক্রিয়ায় বাঁধা হিসেবে কাজ করেছে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুপস্থিতি।

ফার্মেসি বিভাগের ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ রাজবংশী বলেন, ‘সমাবর্তন সব শিক্ষার্থীর লালিত স্বপ্ন। এটা শুধু কালো গাউন আর হ্যাট পরে ছবি তোলা নয়। এর সঙ্গে অনেক সম্মান এবং গর্ব জড়িত। তবে প্রশাসনের অবহেলায় আমরা এ সম্মান থেকে এখনো বঞ্চিত।’

আইন বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তারের ভাষ্য, ‘আমি ২০১৮ সালে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছি। পাস করার পাঁচ বছর পার হওয়ার পরও প্রভিশনাল সার্টিফিকেট দিয়ে চলতে হচ্ছে। আমরা অন্যান্য অনেক দিক দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এগিয়ে আছি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুতই সব সমস্যা কাটিয়ে সমাবর্তন আয়োজন করবে।'

সমাবর্তন আয়োজন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণ ব্যাখা করে গবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘২০১৪ সালের পর সমাবর্তন হয়নি। অনেক শিক্ষার্থী বাকি। আর এবার  শিক্ষার্থীদের তালিকার নতুন ফরম্যাট করেছে। ১৭টি কলাম পূরণ করে শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত তথ্য দিতে হচ্ছে। এজন্য একটু সময় লাগছে।’

আরো পড়ুন: চাপে পড়ে চবির বিজ্ঞাপনের খরচ কি উপাচার্যই দিচ্ছেন?

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে আট হাজার শিক্ষার্থীর তালিকা তৈরি হয়েছে। আরো এক হাজারের মতো বাকি আছে। খুব দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে এ মাসে কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে গবিতে মাত্র তিনটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম, ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট দ্বিতীয় এবং ২০১৪ সালের ২৯ মে তৃতীয় সমাবর্তন হয়। প্রতিটি সমাবর্তনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।


সর্বশেষ সংবাদ