তবুও বহাল তবিয়তে ইউরোপিয়ানের ভিসি আলীম দাদ!

ভিসি প্রফেসর ড. আলীম দাদ
ভিসি প্রফেসর ড. আলীম দাদ  © সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) অনুমোদিত আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি, সনদ বাণিজ্য, তহবিলে পরিচালনায় নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠে বেসরকারি ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. আলীম দাদের বিরুদ্ধে।

পরে তদন্তে নেমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নিতে চিঠি দেয় কমিশন। কিন্তু চিঠি দেয়ার ৯ মাসেও সরানো যায়নি তাকে। বেসরকারি এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ল্যাব আছে এমন বিষয়ে এক সেমিস্টারে ৪০ জনের বেশি ভর্তি করানোর অনুমতি নেই। সেখানে ২০২১ সালের বসন্তকালীন সেমিস্টারে ভর্তি নেয়ার সময় ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে এর ১৪ গুণের বেশি অর্থাৎ ৫৮৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। সেসময় ইইই বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার মো. আলীম দাদ।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগে ১৫ থেকে ৩০ গুণ বেশি পরিমাণ শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়টির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অনুমোদিত আসন সংখ্যা মাত্র ৪০। আর ২০২১ সালের বসন্তকালীন সেমিস্টারে সেখানে ভর্তি করানো হয় ৯০০ জন শিক্ষার্থী। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করায় বিশ্ববিদ্যালয়টি।

ইউজিসি সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোগ্রামে কমিশন অনুমোদিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি, সনদ বাণিজ্য, তহবিল পরিচালনায় অনিয়ম এবং আরও কিছু বিষয় নিয়ে তদন্তে নামে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।

তদন্ত শেষে কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠায় কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মো. ওমর ফারুকের সাক্ষরে ইস্যু করা হয় সেই চিঠি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ও ট্রেজারারকে অপসারণ করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত যাবতীয় আর্থিক তহবিল পুনরায় নিরীক্ষা করার অনুরোধ জানায় কমিশন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টির মাননীয় চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত উপাচার্য প্রফেসর মো. আলীম দাদ শারিরীক ও মানসিকভাবে উপাচার্য পদের অনুপযুক্ত। এছাড়া তিনি অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সময়ে ইইই বিভাগের প্রধান ছিলেন।

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৩১(২) ধারার বিষয় উল্লেখ করে ইউজিসি সে চিঠিতে জানায়, প্রফেসর মো. আলীম দাদ-এর মধ্যে আইনের উক্ত ধারা অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার মত প্রয়োজনীয় দক্ষতা, সুস্থতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী অনুপস্থিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক, প্রশাসনিক ও একাডেমিক অব্যবস্থাপনার দায়ে তাকে পদ থেকে অপসারণ করতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে কমিশন।

কিন্তু চিঠি ইস্যু করার ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য আলীম দাদ। এ বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. আলীম দাদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি এধরণের কোনো চিঠি পাইনি। যেভাবে থাকার কথা আমি সেভাবেই উপাচার্য পদে আছি।

এ বিষয়ে ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মো. ওমর ফারুক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা আমাদের যতটুকু দায়িত্ব তদন্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে পদক্ষেপ নিতে চিঠি পাঠিয়েছি। এখন তারা যদি পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমাদের কিছুই করার নেই।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চশিক্ষা বিভাগে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংশ্লিষ্ট কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence