ছবিটি কর্ণাটকের হিজাব আন্দোলনের মুসকানের, তাবাসসুমের নয়
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৪৫ PM , আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:৩৮ PM
‘ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে হিজাব আন্দোলনের সেই তাবাসসুম দ্বাদশের পরীক্ষায় প্রথম’ হয়েছে শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদে ভুল ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত বছরের জানুয়ারিতে কর্ণাটকের উদিপি জেলায় এক স্কুলে হঠাৎ হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়। পরে স্কুলের ওই ফরমান ক্রমেই রাজ্যের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানী বেঙ্গালুরুতেও সেই ঢেউ আছড়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: কর্ণাটকে হিজাব আন্দোলনের সেই তাবাসসুম দ্বাদশের পরীক্ষায় প্রথম
তখন তাবাসসুম সাইক ও তার অন্য ৫ বান্ধবী বেঙ্গালুরুর স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অনেক দিন বাড়ি বসে ছিলেন। তার সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ছিল বেঙ্গালুরুর এনএমকেআরভি পিইউ কলেজ ফর উইমেন।
বাবা-মায়ের সঙ্গে তাবাসসুম (সংগৃহীত)
সম্প্রতি সেই প্রতিষ্ঠান থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় কলা বিভাগে প্রথম হয়েছেন তাবাসসুম। মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১৭ বছরের এই কিশোরী ৫৯৩ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন তাবাসসুম। হিন্দি, সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানে তিনি ১০০–তে ১০০ পেয়েছেন।
অন্যদিকে, গত বছরের এই অন্দোলন শুরুর পর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে কর্নাটকের মাণ্ড্য জেলার একটি প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজের একটি ভিডিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছিল, হিজাব পরিহিত এক জন পড়ুয়াকে ঘিরে ধরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিচ্ছে একদল যুবক।
ভয় পেয়ে গুটিয়ে না গিয়ে হিজাব পরিহিত পড়ুয়া পাল্টা ‘আল্লা হু আকবর’ স্লোগান দিচ্ছে। তার নাম ছিল মুসকান খান। তিনি কলেজের বি.কম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এ সংক্রান্ত কিছু সংবাদ দেখুন এখানে ও এখানে।
মুসকানকে হয়রানির চেষ্টা এবং তার প্রতিবাদের ভিডিও ভাইরাল (ফাইল ফটো)
এদিকে, চলতি বছরের ২১ এপ্রিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করে কর্নাটক স্কুল এক্সামিনেশন অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট বোর্ড বা KSEAB। সেখানে কলা বিভাগে প্রথম হন তাবাসসুম। ৬০০-র মধ্যে ৫৯৩ নম্বর পান তিনি। এ সংক্রান্ত কিছু সংবাদ দেখুন এখানে এবং এখানে।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের তথ্য মতে, গত ২২ এপ্রিল চলতি বছরের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কর্ণাটক স্কুল পরীক্ষা ও মূল্যায়ন বোর্ড (কেএসইএবি) এই ফলাফল ঘোষণা করে। এর আগে গত ৯ মার্চ শুরু হয়ে ২৯ মার্চ পর্যন্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৭ লাখ ২ হাজার ৬৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং এর মধ্যে ৫ লাখ ২৪ হাজার ২০৯ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়।
এর মধ্যে বিজ্ঞান, বাণিজ্য বিভাগ এবং মানবিক বিভাগ থেকে ভিন্ন ভিন্ন পরিক্ষার্থী মেধা তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। এই মেধা তালিকায় মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম স্থান অর্জন করেন তাবাসসুম সাইক।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুসকান খানের সেই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মুসকান খান মাণ্ড্য জেলার পিইএস কলেজ অব আর্টস, সায়েন্স অ্যান্ড কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অর্থাৎ, তাবাসসুমের ছবি দাবি করা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি (হিজাব পড়া) ভিন্ন আরেক শিক্ষার্থীর; যার নাম মুসকান খান।