চুরির পয়সায় প্রেমিকাকে আইফোন, হবু শ্বাশুড়িকে ফ্ল্যাট ভিকির
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:০৮ PM , আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:১৬ PM
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় বেলিলিয়াস রোডে একটি লোহার সামগ্রীর দোকান থেকে ১ কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দালাল চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাবাদ করে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দফায় দফায় জেরায় আরও তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। -খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ডাকাতির টাকা দিয়েই প্রেমিকাকে আইফোন এবং হবু শ্বাশুড়িকে ফ্ল্যাটবাড়ি কিনে দেওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশে লক্ষাধিক টাকা পাঠিয়েছিলেন আটকদের এক জন ভিকি মল্লিক। ভিকির পাশাপাশি হাওড়ার ডাকাতির ঘটনায় হেমন্ত মিশ্র ও কার্তিক রাম নামে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তর করেছে পুলিশ।
তবে এখনও পলাতক রয়েছেন আরও দুই অভিযুক্ত। তাঁদের এক জনের নাম বোম্বে রাজেশ। পুলিশ জানিয়েছে, এরা প্রত্যেকেই কুখ্যাত অপরাধী। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তবে গত মাসছয়েক ধরে এরা কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, সে খবর পুলিশের কাছে নেই। তাঁদের অপরাধমূলক কাজকর্মের কোনও খবর প্রকাশ্যেও আসেনি।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে চুরি-ছিনতাই বাড়ছে; নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা!
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বেলিলিয়াস রোডে একটি লোহার সামগ্রীর দোকান থেকে ১ কোটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। পালানোর সময় যানজটে গাড়ি আটকে পড়ে ডাকাত দলের। জনাকীর্ণ রাস্তা দিয়ে দিনেদুপুরে পিস্তল উঁচিয়ে ডাকাতদের দৌড় আতঙ্কিত করেছিল এলাকাবাসীকে। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই ভিডিও।
পরে সেই সূত্র ধরে পুলিশ তদন্তে নেমে ওই দোকানের কারবারে জড়িত তিন দালাল- দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বাসিন্দা ননীগোপাল দাস, বালির বাসিন্দা শিবরাম চট্টোপাধ্যায় এবং বরানগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের আশপাশেই ছিলেন ওই তিন দালাল। এর পরেই তাঁদের প্রথমে আটক এবং পরে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দালালদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, লুঠ হওয়া দোকানের ব্যবসায়ী সুনীল শর্মার সঙ্গে তাঁদের পরিচয় মূলত কালো টাকা সাদা করার সূত্রেই।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে থামছে না সাইকেল চুরি, নিরাপত্তায় প্রশাসন ব্যর্থ!
ওই দালালদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ঘটনায় জড়িত সম্পর্কে জানতে পেরে তাঁদের একে একে গ্রেপ্তার করা হয়। কার্তিককে গ্রেপ্তার করা হয় লেকটাউন থেকে। হেমন্তকে লিলুয়া থেকে। আর হাওড়ার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন ভিকি।
জেরায় ভিকি জানান, ডাকাতির পর টাকা ভাগ-বাটোয়ারা শেষে প্রত্যেকেই নিজের নিজের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। ওই টাকা দিয়েই প্রেমিকা মহিমা সিংহকে আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স কিনে দিয়েছেন তিনি। মহিমা উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের বাসিন্দা। পেশায় বার-নর্তকী। কর্মসূত্রে কলকাতায় এসে ভিকির সঙ্গে তাঁর আলাপ। মহিমাকে আইফোন দেওয়ার পাশাপাশি মহিমার মা-কেও একটি ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য সাড়ে চার লাখ টাকা পাঠিয়েছেন ভিকি।
বাকি পলাতক দুই অভিযুক্তের খোঁজে এখনও হাওড়ার নানা জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। বিশেষ করে পুলিশের নজরে রয়েছে বোম্বে রাজেশ। কারণ, ডাকাতি নিয়ে মূলত তাঁর সঙ্গেই দালালদের চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তিমাফিকই রাজেশ বাকিদের একজোট করে ডাকাতি করে। তদন্তের স্বার্থেই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে পাওয়াটা বিশেষ জরুরি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।