ট্রাম্পের শপথের আগেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরতে পরামর্শ

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। তবে তার শপথের আগে থেকেই দেশটির কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনামলে আরও একটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে, প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তাঁর এমন সিদ্ধান্ত অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আটকে দিয়েছিল।

দেশটিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১১ লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধিত ছিলেন। আমেরিকায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সাধারণত নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা থাকে। এই ভিসার মাধ্যমে তাঁদের দেশটিতে পড়াশোনা করার অনুমতি দেওয়া হলেও সেখানে বসবাসের জন্য কোনো আইনি বৈধতা দেওয়া হয় না।

ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে আরও কঠোর অভিবাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এসব নীতির মধ্যে মুসলিম দেশের নাগরিকদের ওপর তাঁর আগের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্প্রসারণ ছাড়াও মার্কিনবিরোধী এবং অ্যান্টি-সেমিটিক বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়েই সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। গত বছর সেখানে ২৭ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ২৩ বছর বয়সী প্রমথ প্রতাপ মিশ্র। এই বছর পলিটিক্যাল সায়েন্সে তিনি স্নাতক শেষ করেছেন। সিএনএনকে প্রমথ বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য একটি ভীতিকর সময়।’

সিএনএন আরও জানিয়েছে, নিউইয়র্ক থেকে ক্যালিফোর্নিয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসগুলোতে শীতকালীন ছুটির আগে থেকেই বিদেশি আসন্ন বিঘ্নের কথা ভেবে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা গেছে। এমনকি কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করার কিংবা গেলেও শপথের আগেই ক্যাম্পাসে ফেরার পরামর্শ দিয়েছে।

কর্নেল ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল লার্নিং অফিস শিক্ষার্থীদের বলেছে—যাঁরা বিদেশে যাবেন, তাঁরা যেন ২১ জানুয়ারি স্প্রিং সেমিস্টার শুরুর আগেই ক্যাম্পাসের ফিরে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি গত মাসেই শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছিল—‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শপথ গ্রহণের পর দ্রুত কার্যকর হতে পারে।’

আরও বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞায় কিরগিজস্তান, নাইজেরিয়া, মিয়ানমার, সুদান, তাঞ্জানিয়া, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইয়েমেন ও সোমালিয়ার মতো ট্রাম্প প্রশাসনের টার্গেটে থাকা দেশগুলো যুক্ত হতে পারে।

তালিকায় নতুন দেশ হিসেবে চীন এবং ভারতের যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস প্রশাসন একটি ই-মেইল করে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরার অন্তত এক সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্রে হাজির থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, একটি বা একাধিক নির্বাহী আদেশ ভ্রমণ এবং ভিসা প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ