আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংরক্ষিত মুসলিম আসন’ বাদ দিতে চায় ভারত সরকার

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়

ভারতের উত্তর প্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘মুসলিম’ তকমা দেওয়ার বিরুদ্ধে আইনি অবস্থান নিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। বুধবার (১০ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টে হলফনামার মাধ্যমে জানানো হয়েছে—আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিশ্ববিদ্যালয় নয় এবং হতেও পারে না।

ভারত সরকার এই অবস্থানের ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান এই উপাধি পায় তা কোনও নির্দিষ্ট ধর্মীয় জনগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠান হতে পারে না। সরকার পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা এ বিষয়ে বলেন, ‘১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক-স্বাধীনতা যুগেও জাতীয় স্তরের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই তাকে কেবল সংখ্যালঘুদের প্রতিষ্ঠান বলা যায় না।’

নরেন্দ্র মোদি সরকার প্রথম থেকেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তকমা দেওয়ার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতার মুখে পড়লেও মোদি সরকারের যুক্তি দেখিয়েছিল যে এই তকমা অসাংবিধানিক। সংসদের আইনের মাধ্যমে যে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে—তাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিশেষ তকমা দেওয়া দেশের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরুদ্ধে। তাছাড়া এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্ধেক আসন মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় তফসিলি জাতি, উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিরা বঞ্চিত করা হচ্ছে।

উচ্চ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল ইউপিএ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর আপিল প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন সলিসিটর তুষার মেহতা। তিনি জানিয়েছেন যে, ‘সেন্ট্রাল এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন (ভর্তি সংরক্ষণ) আইন ২০০৬’ (২০১২ সালে সংশোধিত)-এর ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিমদের জন্য আসন সংরক্ষণ রাখার কোনও প্রয়োজন নেই।

২০১৪ সালে যখন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসে, তখন থেকেই ভারতের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলিমদের লক্ষ্য করে বিদ্বেষমূলক হামলার ঘটনা বেড়েছে।

এর আগে ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার ধর্মীয় মতবিরোধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী। [সূত্র: আনন্দ বাজার]


সর্বশেষ সংবাদ