বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের তোপের মুখে ইরানি প্রেসিডেন্ট
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২২, ১১:৪৪ PM , আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২, ১১:৪৪ PM
ইরানে পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের তোপের মুখে পড়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিবার তেহরানের আলজাহরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যান ইব্রাহিম রাইসি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীরা তাকে দেখে বিক্ষোভ শুরু করে। ছাত্রীরা ‘গেট লস্ট’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।
একজন বিক্ষোভকারী টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীরা প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে বলছেন, ‘রাইসি গেট লস্ট’, ‘মোল্লাস গেট লস্ট’।
রাইসি একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ‘মাছির’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তারা মনে করছে, তারা তাদের খারাপ উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারবে। কিন্তু তাদের অজান্তেই আমাদের ছাত্র এবং শিক্ষকরা সতর্ক রয়েছেন। শত্রুকে তাদের খারাপ উদ্দেশ্য পূরণ করতে দেবেন না তারা।’
আরও পড়ুন: অবুঝ সমাজ ভাবে সিএসই মানেই ‘মোবাইল-কম্পিউটার মেকানিক’
ইরানে ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না করার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়া মাহসা আমিনি এখন গোটা ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
কুর্দি নারী মাহসাকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করে। ইরানের পশ্চিমাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়ে মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে ইরানজুড়ে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
তার পরিবার ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন শুরু থেকেই দাবি করছে, গ্রেপ্তারের সময় মাহসার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠির আঘাত করে পুলিশ। এ কারণেই পরে তিনি চেতনা হারিয়ে কোমায় চলে যান।
তবে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মাহসার মৃত্যুর কারণ ‘অসুস্থতাজনিত’।
এদিকে দেশটির ফরেনসিক চিকিৎসকদের সংগঠন শুক্রবার এক বিবৃতিতে দাবি করে মাহসা আমিনির মৃত্যুর কারণ আঘাতজনিত নয়, বরং বিশেষ কোনো শারীরিক অসুস্থতায় তিনি মারা যান। তবে ওই বিবৃতিতে মাহসাকে আঘাতের তথ্য অস্বীকার করা হয়নি।
মাহসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে উত্তাল ইরানে এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ অন্তত ১৫৪ বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এ পর্যন্ত হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।