আত্মসমর্পণ না করে দেশ ছাড়লেন হাজি সেলিম

হাজি সেলিম
হাজি সেলিম  © ফাইল ছবি

আত্মসমর্পণ না করে দেশ ছাড়লেন পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজি সেলিম। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। ওই মামলায় আওয়ামী লীগের এই এমপির ঈদের পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের কথা ছিল। কিন্তু তার আগে শনিবার সন্ধ্যায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে তিনি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক যান।

তবে তার ছোট ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম বলেন, তার বাবা চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড গেছেন। দুই-তিনদিনের মধ্যেই দেশে ফিরবেন। এরপর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন।

দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ড হওয়ার পরও কোন প্রক্রিয়ায় বিদেশ গেলেন—এমন প্রশ্নে কোনো উত্তর দিতে পারেননি ইরফান সেলিম। তিনি বলেন, একটি টেলিভিশন চ্যানেল তার বাবার বিরুদ্ধে দেশ থেকে পালিয়েছেন বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা সঠিক নয়। বাবা ফিরে আসবেন।

হাজি সেলিমের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, হাজি সেলিমের সফরসঙ্গী হিসেবে ঘনিষ্ঠ কেউকে নিয়ে যাননি। তবে পৃথকভাবে তার ঘনিষ্ঠ কেউ থাইল্যান্ড গিয়ে থাকতে পারেন।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল হাজী সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা সমকালকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি ঈদুল ফিতরের পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। কিন্তু  আত্মসমর্পণ না করেই তিনি গোপনে দেশত্যাগ করলেন। বর্তমানে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজী সেলিম জামিনে আছেন। 

গত সপ্তাহে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ১০ বছর কারাদণ্ড বহালের রায় নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সোমবার বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সমকালকে বলেন, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এখন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতেই হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবেন আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন তিনি। এছাড়া নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা হাইকোর্টে বহাল থাকায় হাজী সেলিম এমপি থাকার যোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়েছেন।

এর আগে গত ৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর সাজা কমিয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায় প্রদানকারী দুই হলেন, বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক।