ভারতে প্রযুক্তিবিদ হতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রুয়েট শিক্ষার্থী

সৌরভ সেন
সৌরভ সেন  © টিডিসি ফটো

ভারতে প্রযুক্তিবিত হতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন গিয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাবেক ছাত্র সৌরভ সেন। ৮ জানুয়ারি বিকালে তামিলনাড়ু রাজ্যের তিরুচাপল্লীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এনআইটি-ট্রিচিতে হোস্টেলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার পরিবার ও সহপাঠীদের অভিযোগ, এনআইটি-ট্রিচির এক শিক্ষকের মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়ে তিনি এই পথ বেছে নেয়।

সৌরভ সেন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড বাজারের দিলীন কুমার সেনের ছেলে। বাগেরহাট সরকারি স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সৌরভ ২০১৮-১৯ বর্ষে রুয়েটে স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।

স্বপ্ন ছিল বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিবিদ হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন। তাই নিজের স্বপ্ন পূরণে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমিয়েছিলেন ভারতে। সৌরভ এনআইটি-ট্রিচিতে ভারত সরকারের আইসিসিআর বৃত্তি নিয়ে পড়তে যান। প্রযুক্তিবিদ না হয়ে ফিরলেন লাশ হয়ে। ১২ জানুয়ারি লাশ দেশে আসলে পারিবারিক শশ্মানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ছেলেকে হারিয়ে বাবা দিলীপ কুমার সেন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। শোকে পাথর হয়ে গেছেন তার মা বুলা রানী সেন।

সৌরভের অকাল মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের দাবিতে তার রুয়েটের সহপাঠী ও পরিবারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটির কাছে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

আরো পড়ুন: ৮০ বছরের পুরোনো স্কুল এখন গুদাম ঘর

তাদের দাবি, সৌরভের আত্মহত্যার ঘটনার পূর্বাপর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে পীড়নকারী এনআইটি-ট্রিচির সহকারী অধ্যাপক ড. আর বালাকৃষ্ণানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সহপাঠী ও পরিবারের আরও অভিযোগ, অধ্যাপক ড. আর বালাকৃষ্ণান একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌরভ সেনকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। সহকারী হাইকমিশনার অভিযোগটি গ্রহণ করে যথাযথ মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

সৌরভের ছোট বোন প্রমা সেন বলেন, এনআইটি-ট্রিচিতে বি.টেক প্রথম সেমিস্টারে সৌরভ ১০ এর মধ্যে ৮ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট অর্জন করে। বিভাগে দ্বিতীয় স্থান দখল করে। ভালো ফলাফল তার জন্য কাল হয়ে দাড়ায়। ২৭ ডিসেম্বর থেকে তার দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। ৮ জানুয়ারি দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ছিল শেষ পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষেই ওই ঘটনা ঘটে।

প্রমা বলেন, শেষ পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট আগে সৌরভ উত্তর লিখে শেষ করে। এটা দেখে শিক্ষক বালাকৃষ্ণান সন্দেহ করেন সৌরভ নকল করেছে। সৌরভ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, সে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষায় ভালো করেছে। কিন্তু তার কথা তিনি মানতে চাননি। বালাকৃষ্ণান তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার বৃত্তি বাতিলের হুমকি দেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল সে।


সর্বশেষ সংবাদ