বন্ধুর জন্য সুধীর বাবু কাঁদলেন, কাঁদালেন

নামাজিদের পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কাঁদছেন সুধীর বাবু
নামাজিদের পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কাঁদছেন সুধীর বাবু   © সংগৃহীত

‘কে গরীব কে আমীর সে মানে না, জাতের বিচার করা সে জানে না; সে হলো- বন্ধু।’ শিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী ও মুন্না আজিজের গাওয়া এই এই গানটির যেন বাস্তব এক উদাহরণ মিললো কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সুধীর বাবু আর তার বন্ধু মীর হোসেন সওদাগরের জীবন থেকে।

সুধীর বাবু হিন্দু আর মীর হোসেন মুসলিম। ছেলেবেলা থেকেই দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। কিন্তু তাদের এই বন্ধুত্বে কখনোই ধর্ম বা জাত বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। সেই চিত্র দেখা গেল শেষ বেলায় এসেও। 

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বার্ধক্যজনিত রোগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মীর হোসেন। মৃত্যুর খবরে শোকে কাতর দীর্ঘদিনের সাথী সুধীর বাবু বিদায় বেলায়ও সঙ্গ ছাড়েননি বন্ধুর। বন্ধুর জানাজার নামাজের সময়ও নামাজিদের পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে চোখের পানি ফেলতে থাকেন তিনি।

বিষয়টি উপস্থিত সকলের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তার কান্না অন্যদেরও কাঁদিয়ে ফেলে। হৃদয়-স্পর্শ করা ওই মুহুর্তের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। আবেগ ও কান্নায় ভাসায় নেটিজেনদেরও।

এলাকাবাসী জানায়, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী বাজারে ব্যবসা করতেন মীর হোসেন ও সুধীর বাবু দুজনেই। মুদি ব্যবসায়ী বন্ধুর মৃত্যুর খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে শোকাতর হয়ে পড়েন তার সাথী।

পরদিন বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জানাজা চলাকালে সুধীর বাবু পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজাস্থলে উপস্থিত সকলে তার এ অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে অবাক হয়ে যায়। এসময় তোলা তার ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা হলে মুহূর্তেই তা নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে যায়।

নেটিজেনদের মন্তব্য, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বন্ধুত্ব তো এমনই হওয়া উচিত।

তারা লিখেছেন, সত্যিকারের বন্ধুত্ব আসলেই এমন হয়। যে বন্ধুত্ব জাত দেখে না। ধর্ম দেখে না। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ চেনে না।


সর্বশেষ সংবাদ