পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থান হারাল বাংলাদেশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২১, ০৯:৫৭ AM
এক দশক পর পোশাক রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের কাছে দ্বিতীয় অবস্থান হারাল বাংলাদেশ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা- ডব্লিউটিও প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিক্যাল রিভিউ ২০২১’ এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে দেখা গেছে, বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে ২০২০ সাল শেষে বাংলাদেশের অবস্থান তিন নম্বরে। বরাবরের মত শীর্ষে রয়েছে চীন। বেশ কয়েক বছর থেকে বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে একেবারে কাছাকাছি রয়েছে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম।
২০২০ সালে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের পোশাকপণ্য রপ্তানি করে শক্তিশালীভাবে প্রথম অবস্থান ধরে রেখেছে চীন। বিশ্ববাজারে তাদের অংশীদারিত্ব ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসা ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলার; বিশ্ববাজারে অংশীদারিত্ব ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ।
আর গত বছর বাংলাদেশ ২৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে; মোট বিশ্ব রপ্তানিতে অংশ ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
তালিকায় ওঠানামা হলেও মোট রপ্তানির পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে উভয় দেশেরই কমেছে। তবে বাংলাদেশের কমার পরিমাণ ছিল তুলনামূলক বেশি বলে ডব্লিউটিও এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে।
২০১০ সালে তৈরি পোশাকের বিশ্ব রপ্তানি বাজারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ অংশীদারিত্ব অর্জন করে তুরস্ককে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থা এসেছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকে এই অব্সথান ধরে রেখেছিলেন দেশের প্রধান এই রপ্তানি খাত।
তখন তুরস্কের অবস্থান ছিল ৩, ভারতের অবস্থান ছিল ৪। ওই সময় বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামের অবস্থান ছিল ২ দশমিক ৯ শতাংশ।
প্রতিযোগীর চেয়ে পিছিয়ে পড়ার বিষয়ে অবশ্য দুশ্চিন্তার কিছু দেখছেন না তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠনের নেতা ফারুক হাসান।
এক দশক পর এক ধাপ নেমে যাওয়ার বিষয়ে তিনটি কারণের কথা বলেছেন বিজিএমইএ এর সভাপতি। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম পোশাক রপ্তানিতে গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের কাছাকাছি অবস্থানেই ছিল।
“তিন কারণে ২০২০ সালে তারা বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে গেছে। এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ বাংলাদেশ অচিরেই আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারবে বলে আশা করছি।
“ভিয়েতনামে মহামারীর ধাক্কার কারণে উৎপাদন ও রপ্তানি খুব বেশি একটা বাধাগ্রস্ত হয়নি। দ্বিতীয়ত তারা নন কটন (মেনমেইড ফাইবার) আইটেমের পণ্য তৈরি করে আগে থেকেই শক্ত অবস্থানের দিকে আসছিল। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে ওই বাজারে তারা সব সময় অগ্রাধিকার পাচ্ছে।”
অন্য শিল্প মালিকরাও একই কথা বলছেন। তারা বলেন, ২০২০ সালে মহামারী শুরুর পর এপ্রিল, মে ও জুন মাসে লকডাউনের কারণে বাংলাদেশে রপ্তানি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও ভিয়েতনামে তেমনটা হয়নি। তাদের আশা চলতি ২০২১ সালে বাংলাদেশ আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারবে।
এই বিষয়ে বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ও তরুণ উদ্যোক্তা ফজলে শামীম এহসান মনে করেন, অবকাঠামোগত সুবিধার কারণে গত কয়েক বছরে ভিয়েতনাম পণ্য সরবরাহে তাদের লিডটাইম কমিয়ে আনতে পেরেছে। তারা পণ্যের বৈচিত্র্যকরণের দিকে যেতে পেরেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তারা ডিউটি ফ্রি একসেস পাচ্ছে, যেটা আমরা পাচ্ছি না। এসব কারণে গত কয়েক বছরে তারা এগিয়ে আসছিল।