পাঁচ ভরি স্বর্ণের হার ফিরিয়ে দিলেন রিকশাচালক যুবক

দিগন্ত
দিগন্ত  © সংগৃহীত

জীবিকার সন্ধানে প্রতিদিন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হতে হয় হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে দিগন্তকে (২৫)। প্রতিদিনের মতো শনিবার বিকালেও বের হন রিকশা নিয়ে। যাওয়ার সময় সড়কে কুড়িয়ে পান পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণের হার।

তবে এই স্বর্ণ নিজে না নিয়ে সেটি মূল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য জমা রাখেন রিকশার মালিকের কাছে। অবশেষে গতকাল রোববার মালিককে শনাক্ত করে সেই হার বুঝিয়ে দিয়েছেন দিগন্ত।

দিগন্ত দাস ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া গ্রামের গুরুপদ দাসের ছেলে। তার মা-বাবা দুজনই প্রতিবন্ধী। শহরের আড়পাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে তাদের নিয়েই থাকেন দিগন্ত।

এ বিষয়ে দিগন্ত বলেন, শনিবার বিকাল ৫টার দিকে রিকশা চালিয়ে শহরের জনতা ব্যাংক মোড় দিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় সড়কে একটি সোনার হার পড়ে থাকতে দেখি। সেটি হাতে নিয়ে আশপাশের কয়েকজনকে জানাই। পরে সন্ধ্যার পর আমার রিকশার মালিক নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের কাছে জমা রাখি। পরদিন শহরে হার হারানোর বিষয়ে মাইকিং শুনে মালিককে শনাক্ত করে ফিরিয়ে দিই। হারের মালিক খুশি হয়ে আমাকে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি দেখে বেরিয়ে পড়েন রিকশাচালক ইসমাইল, ফিরলেন লাশ হয়ে

পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণের হারটি ছিল কালীগঞ্জ পৌর এলাকার হেলায় গ্রামের নজরুল ইসলামের প্রবাসী ছেলে রাশেদ হোসেনের স্ত্রীর।

এ বিষয়ে রাশেদ জানান, শনিবার বিকাল ৪টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অসাবধানে শহরের কোথাও হারটি পড়ে যায়। বাড়িতে আসার পর বিষয়টি টের পান তারা। পরে শহরের নানা স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। রোববার শহরে এ নিয়ে মাইকিং করেন। রিকশাচালক দিগন্ত তাকে হার পাওয়ার কথা জানান। এদিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার হারটি বুঝিয়ে দেন দিগন্ত। তার বিরল সততায় মুগ্ধ হয়ে মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছেন।

দিগন্তের প্রশংসা করে রিকশার মালিক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মূল্যবান সোনার হারটি পেয়ে তিনি প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার জন্য আমার কাছে জমা রেখেছিলেন। এ যুগে এমন সৎ মানুষ প্রায় দেখাই যায় না। সততার জন্য দিগন্তকে স্যালুট জানাই।’


সর্বশেষ সংবাদ