দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার প্রস্তাব আগে দিয়েছিল বিএনপিও
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৬ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:১০ PM
নতুন বাংলাদেশ গঠনে দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না; এমন নিয়ম করার সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এটিসহ ৫৫টি সুপারিশ তুলে ধরেন। তবে সরকারে গেলে প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে এমন নিয়ম কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি আরও এক বছর আগেই দিয়েছিল বিএনপি।
বুধবার ‘নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি প্রতিরোধ, গণতন্ত্র ও সুশাসন’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্যে ড. ইফতেখারুজ্জামানের করা সুপারিশে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সংসদীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। নির্বাচিত সংসদ-সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গণ-অনাস্থা প্রকাশের মাধ্যমে অপসারণ এবং নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলনিরপেক্ষ করতে অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্বকারী গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সব সংশোধনী বাতিল করতে হবে। একই ব্যক্তি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদনেতা থাকতে পারবেন না। এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। পাশাপাশি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি শক্তিশালী করে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চত করতে হবে।
বিশেষ করে হিসাব, আইন, বিচার ও সংসদ, অর্থ, বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ৫০ শতাংশ বিরোধীদলীয় এমপিদের মধ্য থেকে সভাপতি নির্বাচন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে গত বছরের ১৩ জুলাই সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা দেয় বিএনপি। ওইদিন এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ চেয়ে ‘এক দফা, এক দাবি’ ঘোষণার পরদিন এ রূপরেখা দেওয়া হয়।
তিন নম্বরে সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমন্বয় করার প্রতিশ্রুতি দেয় বিএনপি। আর চার নম্বরে বলা হয়, পরপর দু’বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
আরো পড়ুন: ড. ইউনূসকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানালেন আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট
রূপরেখাকে দলীয় ‘প্রতিশ্রুতি’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ রূপরেখা অত্যন্ত উপযোগী প্রস্তাব। এ রাষ্ট্রকে মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশের জনগণের হাতে মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর সরকার হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সমন্বয়ে ‘জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি বলেন, একটি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠন করে বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনগুলো পর্যালোচনা করে রহিত বা সংশোধন করা হবে।গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। ৩১ দফার দুই নম্বরে বলা হয়, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।