‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা সরাসরি জড়িত’ দাবি নিহত মেজর জেনারেলের ছেলে রাকিনের

  © সংগৃহীত

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা, শেখ ফজলে নূর তাপস ও শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বিচার দাবি করেছেন বিডিআর বিদ্রোহে নিহত তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া। এ সময় তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও ট্রায়ালের দাবিও জানান। 

শনিবার দুপুরে মহাখালী রাওয়া ক্লাবের স্কাইলাইন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিডিআর বিদ্রোহে নিহত কর্নেল কুদরত ইলাহী রহমান শফিকের স্ত্রী লবী রহমান ও ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান। 

জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন বলেন, ‘নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। অনেক সেনা অফিসার বিচার চাইতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন। কেউ কেউ জেলে গেছেন। দরবারের শত শত অফিসারের জীবন ধ্বংস করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সেনা অফিসারদের পরিবারকে যেন যথাযথ সম্মান ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। যেসব নির্দোষ, দেশপ্রেমিক বিডিআর সৈনিক জেল খাটছেন, সুষ্ঠু তদন্তে যেন তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আওয়ামী লীগ নেতা ফোন করে আমাকে বলেছিলেন, ওনার নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমার বাবা-মাকে জবাই দিয়েছেন। যদি বেশি বাড়াবাড়ি করি তাহলে বাবা-মার মতো আমাকেও জবাই দিয়ে দেবে।’ 

রাকিন বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে জানা নেই, যেখানে রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) অন্য একটা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাজধানীতে ৫৭ সেনা অফিসারকে হত্যা করে। ওই দিনটিকে আমরা শহীদ সেনা দিবস দাবি করছি। গত ১৫ বছরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের ট্রায়াল বা তদন্তকে আমরা মানি না। কারণ, প্রধান যে হত্যাকারী, নির্দেশদাতা তিনি তখন ক্ষমতায় ছিলেন। খুনি কি তাঁর নিজের বিচার করবে? মুখ বন্ধ করে দেখতে হয়েছে, কেমন করে তদন্ত, ট্রায়াল প্রভাবিত করল, ডাল–ভাতের কথা বলল। নীরবতায় সহ্য করতে হয়েছে।’ 

এ সময় তিনি দাবি করে বলেন, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত শেখ হাসিনা, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম। নাটক সাজানোর নামে রহস্যশালা আর চাই না।’ 

সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী এগিয়ে যায়। তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই ছাত্র-জনতার ওপর গুলি না করে এগিয়ে এসেছে। জনগণকে অনুরোধ করব, সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করুন।’ 

সংবাদ সম্মেলন থেকে পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করে নিহতদের পরিবার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর হাতে থাকা ট্র্যাজেডির সমস্ত তদন্তের রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ, তদন্ত কমিশন গঠন, ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা হিসেবে ঘোষণাসহ পিলখানায় শহীদ ৫৭ অফিসার ও ১৭ সাধারণ নাগরিকের পরিবারের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান। 

এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট সাকিব বলেন, ‘দুটো তদন্ত কমিটি হয়েছিল। বাহিনীর পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীরের তদন্ত কমিটির রিপোর্টটা পুরোটাই দেখতে চাই। তাতে আমরা অনেক কিছু জানতে পারব। আর উচ্চ আদালত যে তদন্ত কমিশনের কথা বলেছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে পর্দার আড়ালে যারা ষড়যন্ত্রকারী তারা বেরিয়ে আসবে। আইনের আওতায় আনতে চার্জ করা যাবে।’ 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একজন আইনজীবী হিসেবে সরাসরি দায়ী করতে পারি না। অনেক নামই শুনি, সেগুলো তখনই বলতে পারব, যদি তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। এমনি এমনি নাম বলে দেওয়া যায় না।’ 

কর্নেল কুদরত ইলাহীর স্ত্রী লবী রহমান বলেন, ‘অনেক কিছুই তো পেয়েছি। কিন্তু গত ১৫ বছরে আমরা শুধু বিচারই চেয়েছি। প্রথমেই আমাদের প্রশ্ন করা হয়, কী কী পেয়েছি। ইচ্ছে হয় সব ফেরত দিই, আমার স্বামী শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীকে ফিরিয়ে দেন। এটা সিনেমা বা নাটকের প্রমোশন না, এটা খুবই সেনসিটিভ।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence