স্কুলের ভবন ভেঙে বাড়ি নিয়ে গেলেন প্রধান শিক্ষক!
- রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:০৫ AM , আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৫:১৬ PM
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে একটি হাই স্কুলের সেমি পাকা ভবন ৬টি রুমের একটি বিক্রি এবং দুটি টয়লেটসহ ৫টি রুম ভেঙে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আমিনুর রহমান আফসান ও আশিকুর রহমান আদনান নামের দুই ব্যক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য মাঠের পূর্ব প্রান্তে ছিল একটি ৩৫ হাত এবং আরেকটি ২০ হাত সেমি পাকা বিল্ডিং। দুটি বিল্ডিংয়ে শ্রেণিকক্ষ ছিল ৬টি। মাঝে ছিল শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য ছাদ ঢালাই করা দুটি পাকা টয়লেট। নতুন ভবন করার আগে বিধি বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক তার একক সিদ্ধান্তে শাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন টিনসেড হাফ বিল্ডিং ভেঙে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান এবং আরেকটি বিক্রি করেন। যা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত নন বলে দাবি তাদের।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আমিনুর রহমান আফসান বলেন, আমরা ছাত্র থাকাকালে দুটি ঘর এবং মাঝে দুটো বাথরুম ছিল। নতুন ভবনটি আসার পর কোনো ঢোলসহরত কিংবা মাইকিং না করেই এগুলো প্রধান শিক্ষক গায়েব করে দেয়। এলাকাবাসী বা প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
অপর অভিযোগকারী আশিকুর রহমান আদনান বলেন, করোনাকালে নতুন ভবন করার আগে একটি টিনসেড বিল্ডিং স্কুলের পিয়নের কাছে বিক্রি করলেও অন্য টিনসেড বিল্ডিংটি প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আকতার ভেঙে নিয়ে যান। এর সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি আবেদন করেছেন তারা।
সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়ে সোলায়মান মন্ডল বাবলু নামের এক স্থানীয় বলেন, এখানে একটা ২০ হাত এবং আরেকটা ৩৫ হাত ঘর ছিল। এর একটি পিয়ন, আরেকটি হেডমাস্টার নিয়ে যান। তা দিয়ে কী করা হয়েছে জানি না আমরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের অফিস সহায়ক আব্দুর রাজ্জাকের উঠানে স্কুল ভেঙে নিয়ে যাওয়া পুরোনো ইটের স্তূপ। তিনি বলেন, ৬টি রুম ও দুটি বাথরুমের মধ্যে একটি রেখে বাকিগুলো হেডমাস্টার ভেঙে নিয়ে যান। পরে বাকি ১২ হাতের রুমটি হেডমাস্টারের নিকট থেকে ২৭ হাজার টাকায় কিনেছি।
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন প্রামানিক বলেন, বিদ্যালয়ের স্বার্থে তিনটি হাফ বিল্ডিং করেছিলেন তিনি। তারমধ্যে ওই দুটি ছিল ৫৫ হাত। এছাড়া আমি থাকাকালীন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল অনেক। এখন দিন দিন সেই সংখ্যা কমছে।
এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আকতারের সাথে সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টাকালে দেখা যায়, ক্লাস চলাকালীন ভবনের মূল ফটক তালা দেয়া। গেটে দাঁড়িয়ে কথা বলতে চাইতেই ভেতর থেকে সাফ জানিয়ে দেন সাংবাদিকের সাথে কোনো কথা বলবেন না তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, 'কাউকে অবহিত না করে বিদ্যালয়ের টিনসেড বিল্ডিংটি বিক্রির যে অভিযোগটি এসেছে তার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।