দেশে নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন বেশি, এগিয়ে খুলনার মেয়েরা

পুরুষের তুলনায় নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি
পুরুষের তুলনায় নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি  © সংগৃহীত

দেশে বিবাহ বিচ্ছেদের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ফুটফুটে সন্তান, সুন্দর সংসার ও মধুর সম্পর্কের স্মৃতি কোনো কিছুই আটকাতে পারছে না এ বিচ্ছেদ। দেশে হরহামেশায় বিবাহ বিচ্ছেদের কথা শুনা যায়। সবশেষ গত পাঁচ বছরে পুরুষের তুলনায় নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদ বেড়েছে। আগে শতকরা ৭০ ভাগ তালাকের ঘটনা ঘটত স্বামীকর্র্তৃক। কিন্তু এখন বিচ্ছেদের আবেদনে এগিয়ে রয়েছে নারীরা। 

বিশেষ করে শহরাঞ্চলে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বাড়ছে। অনেক নারী তাদের স্বামী কর্তৃক তালাক প্রাপ্ত হয়েছে আবার অনেকে নিজ উদ্যোগে বিচ্ছেদ করেছেন। বর্তমানে দেশে তালাক, দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের হার বেড়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে পুরুষের তুলনায় নারীরা তালাক ও বিচ্ছেদের পথে বেশি এগিয়েছেন। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স (এসভিআরএস) প্রতিবেদন ২০২২-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দেশে বিবাহিত মানুষের হার যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি তালাক, দাম্পত্য বিচ্ছেদসহ বিধবার সংখ্যাও বেড়েছে। 

বিভাগভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, খুলনা বিভাগের নারীরা ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি তালাক ও দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের পথে এগিয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে রাজশাহী বিভাগ। এ হার সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগের নারীদের মধ্যে।

বয়সভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, দেশের ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারী-পুরুষ সবচেয়ে বেশি তালাক বা দাম্পত্য বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন। জরিপের তথ্যে দেখা যায়, ২০২২ সালে দেশে ১ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ তালাক ও বিধবা দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের পথে হেঁটেছেন, বিপরীতে নারীদের এ হার ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। শুধুমাত্র তালাক, দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের পথে হেঁটেছেন ১ দশমিক ২ শতাংশ নারী।

শুধুমাত্র তালাক, দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের বিভাগভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, ২০২২ সালে খুলনার নারীরা এ পথে সবচেয়ে বেশি হেঁটেছেন। খুলনার ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ নারী তালাক অথবা দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। দ্বিতীয় অবস্থানে রাজশাহী বিভাগ, এ বিভাগের ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ নারী। তবে এ হার সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগের নারীদের মধ্যে। এ বিভাগের শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ নারী তালাক বা বিচ্ছেদ নিয়েছেন।

পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার খুলনায় বেশি। এ বিভাগের শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ পুরুষ তালাক বা বিচ্ছেদ নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রাজশাহীর পুরুষরা, শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ। দেশে বিবাহিত মানুষের হার বেড়েছে। বর্তমানে দেশের প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের ৬৩ দশমিক ৯ শতাংশ বিবাহিত। বিপরীতে দেশে ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ বিয়ের বয়স হওয়ার পরও বিয়ে করেননি। 

আরও পড়ুন: দেশে অবিবাহিত পুরুষ বেশি সিলেটে, কম রাজশাহীতে

এদিকে দেশে সবচেয়ে অবিবাহিত পুরুষের হার বেশি সিলেটে। এ বিভাগের প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪৪ দশমিক ৯১ শতাংশ নারী এখনও বিয়ে করেননি। সামগ্রিকভাবে দেখা গেছে, কখনোই বিয়ে করেননি এমন পুরুষ জনসংখ্যার অনুপাত ৪৮.৪৯ শতাংশ এবং নারীদের ক্ষেত্রে তা ৩৬.৪২ শতাংশ।

অবিবাহিত মানুষদের বিভাগভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, বয়স হওয়ার পরও বিয়ে না করার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে চট্টগ্রাম বিভাগ। এ বিভাগের ৫৫ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক এখনও বিয়ে করেননি। পুরুষদের মধ্যে অবিবাহিত থাকার অনুপাত সবচেয়ে কম রাজশাহী বিভাগে। এ বিভাগের ৪৩.০১ শতাংশ পুরুষ অবিবাহিত। রাজশাহীর পর অবিবাহিত পুরুষের হার সবচেয়ে কম খুলনা ও রংপুরে। 


সর্বশেষ সংবাদ