সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি, তাদের রিপোর্ট নির্জলা মিথ্যাচার: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ  © সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ সিপিডি’র সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত রিপোর্ট সম্পর্কে বলেছেন, ‘সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি। কিছু পত্রিকার কাটিং জোগাড় করে একটা রিপোর্ট তৈরি করে সেই আলোকে একটা সংবাদ সম্মেলন করেছে। তাদের বক্তব্য নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া অন্য কিছু নয়।’

আজ মন্ত্রীর নিজ জেলা চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি'র দেওয়া তথ্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অসত্য এ সমস্ত তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘সিপিডি’র সংবাদ সম্মেলনে যদিওবা গবেষণার কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে গবেষণা করতে অনেক সময় লাগে, অনেক তথ্য-উপাত্ত থাকে। কিন্তু সিপিডি এই রিপোর্ট তৈরি ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনেক লুকোচুরি করেছে এবং অনেক ভুল ও অসত্য তথ্য তারা পরিবেশন করেছে।’

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘যেমন সিপিডি বলেছে, আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে বিদেশনির্ভর। অথচ আসলে আমাদের চলতি বাজেটের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে বিদেশনির্ভর। এক সময় এটি ২০ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার কারণে এটি ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অথচ সিপিডি বলেছে এটি ৭৫ শতাংশ। এছাড়া সিপিডি বলেছে বেসিক ব্যাংক থেকে চার হাজার কোটি টাকা লোন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা ইতোমধ্যে আদায় করা হয়েছে এবং বাকি দুই হাজার কোটি টাকার জন্য মামলা করা হয়েছে, মামলা চলমান, আদায় প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিপিডি আরো বলেছে যে, নাবিল গ্রুপ ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেই ঋণ যে সব আদায় হয়েছে, সে তথ্য সিপিডির রিপোর্টে জানানো হয়নি। ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলোকে লুকানো হয়েছে। সিপিডি চট্টগ্রামভিত্তিক একটি গ্রুপের কথা বলেছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চেক করেছি। সেই গ্রুপের কোনো লোনই ক্লাসিফায়েড নয়। অর্থাৎ সিপিডি অসত্য তথ্য দিয়েছে।’

ক্লাসিফায়েড লোনের আকার বেড়েছে সিপিডির এমন তথ্যের সমালোচনা করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তারা শুধু্ এর আকারের কথা বলেছে, পারসেন্টেজের কথা বলেনি। কারণ, ক্লাসিফায়েড লোনের হার কমেছে। ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপি ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। এখন জিডিপি হচ্ছে  প্রায় ৫০০ বিলিয়ন বা হাফ এ ট্রিলিয়ন ডলার। জিডিপি ৬ গুণ বৃদ্ধি পেলে তো ক্লাসিফায়েড বা ব্যাড লোনের আকারও বৃদ্ধি পাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পারসেন্টেজ কতো, সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। ২০০৯ সালে ক্লাসিফায়েড লোন ছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, আর এখন ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তখনকার তুলনায় কমেছে।’

বিএনপির তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যে তিনদিন কর্মসূচি দিয়েছে, জনগণও জানে না, কেউ খেয়ালও করে নাই। হয়তো বা সাংবাদিকরা খবরা-খবর রাখেন বলেই খেয়াল করেছেন। তারা কোন দিন হরতাল দেয়, কোন দিন অবরোধ দেয়, কেউ কিন্তু খেয়াল করে না। বাংলাদেশের মানুষও খেয়াল করেনি, কাকপক্ষীও খেয়াল করেছে কি না আমি জানি না। সুতারং এগুলো গতানুগতিক কর্মসূচি এবং হাস্যকর।’


সর্বশেষ সংবাদ