মার্কিন নতুন ভিসা নীতি: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক শীর্ষক সেমিনার

আলোচনা সভায় অতিথিবৃন্দ
আলোচনা সভায় অতিথিবৃন্দ  © টিডিসি ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই ঘোষণা করেছেন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচনের পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতির লক্ষ্য ও উদ্দশ্য কী? ওয়াশিংটন তাহলে ‘চীন-ঠকাও’ নীতির অংশ হিসেবে এধরণের ভিসা নীতি প্রয়াগ করে বাংলাদেশের ওপর খবরদারি করতে চাইছে? জাতিসংঘ কি অনধিকার চর্চার এই দায়িত্ব দেশটিকে দিয়েছে?’ 

শুক্রবার (২ জুন) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম অডিটোরিয়ামে আয়াজিত ‘মার্কিন নতুন ভিসা নীতি : যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদশ সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণাভিত্তিক সংগঠন ‘এডুকশন, রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট ফোরাম বাংলাদশ (ইআরডিএফবি)’ উক্ত সেমিনারের আয়াজন করে।

বাংলাদশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবি’র সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তুরস্কের নির্বাচনকেও প্রভাবিত করার অনৈতিক চেষ্টা করেছে দেশটি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত ভূমিকা ছিল, তারা কখনোই বাংলাদেশের মঙ্গল চায়নি। মার্কিন নতুন ভিসা নীতি যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা।’

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলন, ‘পশ্চিমা হস্তক্ষেপ কোথাও কোনো উন্নতি করতে পারেনি, সেটা হোক লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান কিংবা সিরিয়া। বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল কিছু হলেই বিদেশি হস্তক্ষেপ, বিদেশি সাহায্য কামনা করেন। এই হস্তক্ষেপ যে কতটা ভয়ানক হতে পারে, তার চাক্ষুস উদাহরণ লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাকের মতো দেশগুলা। বিদশি শক্তির কাঁধে ভর করে ক্ষমতার লোভে যারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় তাদের শক্তভাবে প্রতিহত করতে হবে।’

উক্ত সেমিনার বিশষ অতিথি ছিলেন বাংলাদশ সরকারি কর্ম কমিশনর সদস্য অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। 

অনুষ্ঠানরে বিশেষ অতথি অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ১৯৭১ এবং ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রেএ ভূমিকা দেখেছি। তাদরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পূর্বে যদিও দেশকেন্দ্রিক ছিলো কিন্তু তা এখন ব্যক্তি র্পযায়ে নিয়ে এসেছে যা কোনোভাবইে একটা গণতান্ত্রিক দেশের জন্য কাম্য নয়। যদি বন্ধু হয় তাহলে বন্ধুর মতই আচরন করা উচতি। এটা তো কোন আইন হতে পারেনা যে কোনো একটা গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনকে প্রভাবতি করার জন্য নির্বাচনের পূর্বে তার উপর এমন সব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং তা পৃথিবীর কোনো স্বাধীন এবং গণতান্ত্রকি দেশের আইনের আওতায় পড়ে না। যুক্তরাষ্ট্ররে ইচ্ছে হলে নিষেধাজ্ঞা দেবে আর ইচ্ছে না হলে দেবেনা এটা মূলত বিশ্ব রাজনীতির আদর্শের ব্যত্যয়।“ 

জাহাঙ্গীরনগর বশ্বিবদ্যিালয়ের সাবেক উপার্চায অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭১ থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও বিরোধ বাংলাদশ সরকার ও বাংলাদেশের মানুষ ভয় পায়না। কারণ বাঙালিরা মূলত লড়াকু জাতি। তারা কোনো সময় অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি এবং আজও করবে না। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বুকে ধারণ করে সব ধরনের চক্রান্তের উচিত জবাব বাঙালিরা মুক্তযিুদ্ধে যেমন দিয়েছিল তেমনি আজও দেবে।

অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, " যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি একটি অস্পষ্ট এবং অপরিপূর্ণ ভিসা নীতি। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই আমাদের এবং এটাকে খুব বড় করেও দেখার কিছু নেই। এই ভিসা নীতি প্রধানমন্ত্রীর পূর্ব ঘোষিত অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক ভূমকিা পালন করবে বলেই মনে হচ্ছ।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইআরডিএফবি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য ও ইআরডিএফবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান।


সর্বশেষ সংবাদ