এসএসসি পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

অভিযুক্ত মো. নেছার উদ্দিন
অভিযুক্ত মো. নেছার উদ্দিন  © সংগৃহীত

পটুয়াখালীতে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রভাবশালীদের চাপে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর এ সংক্রান্ত অভিযোগ দাখিল করা হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. নেছার উদ্দিন। তিনি বাউফল উপজেলার মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক। ভুক্তভোগী ছাত্রী ওই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো. নেছার উদ্দিন বিদ্যালয়ের পাশে একটি ভবনে প্রাইভেট পড়ান। ভুক্তভোগী ছাত্রী দুই বছর ধরে তার কাছে প্রাইভেট পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে নেছার উদ্দিন তাকে নানা ভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কৃষি শিক্ষা বিষয়ের ব্যবহারিক খাতা আঁকতে দেন শিক্ষার্থীরা। সবার খাতা দেখে ফেরত দেওয়া হলেও ভুক্তভোগী ছাত্রীর খাতা রেখে দেওয়া হয়। 

পরে ওই ছাত্রীকে খাতা নেওয়ার কথা বলে রুমে একা দেখা করতে বলেন নেছার উদ্দিন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের মতলব বুঝতে পেরে খাতা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানালে পরিবারের সদস্যরা প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, নেছার উদ্দিনের মামা স্থানীয় প্রভাবশালী শাহজাদা উল্লা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই ছাত্রীর পরিবারকে ম্যানেজ করে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, শাহজাদা উল্লা প্রচুর অর্থের মালিক। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত না হলেও স্থানীয়ভাবে বেশ প্রভাবশালী। ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারকে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনা ধামাচাপা দিতে দুই থেকে তিন লাখ টাকা বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক নেছার উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন। একটি কুচক্রী মহল আমার সম্মানহানী করার জন্য এমন খবর ছড়িয়েছে। ওই ছাত্রী যে অভিযোগ করেছিল সেটি তুলে নিয়েছে।

টাকার বিনিময়ে ঘটনা মীমাংসের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বেতন পাই ৩৪০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে কীভাবে দুই লাখ টাকা দেব? বাড়িতে কোচিং করানোর অর্থ দিয়ে মীমাংসা করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন মিয়া বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় আমরা তাকে বিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। গতকাল বুধবার তার অব্যাহতিপত্রের রেজ্যুলেশন বের হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আল-আমিন বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। তবে আমরা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ