সড়কে উড়ছিল অসংখ্য ৫০০ টাকার নোট, যা করলেন পুলিশ কনস্টেবল

কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হয় মালিককে
কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হয় মালিককে  © সংগৃহীত

সড়কে ছড়িয়ে ছিল ৫০০ টাকার বেশ কিছু নোট। সেগুলো উড়ছিল বাতাসে। কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন রিকশাচালক। বিষয়টি দেখে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী এগিয়ে গিয়ে ফেরত নেন। তখন সড়কে কিছু নোট পড়ে থাকতে দেখে সেগুলো সংগ্রহ করেন পুলিশ সদস্য।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট নগরের নাইওরপুল মোড়ে ঘটেছে এ ঘটনা। ঘটনাটি মোহাম্মদ আলী সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তাকে জানান। কেউ টাকা হারানোর জিডি করতে এলে যেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়।  

বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কেউ খোঁজ করতে আসছিলেন না। এ সময় তিনি দোকানগুলোতে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য যান। বিকেল পৌনে ৩টার দিকে মোহাম্মদ আলীর ফোনে কল করেন এক ব্যক্তি। বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া টাকাগুলোর মালিক তিনি।

মোহাম্মদ আলী বলেন, বুধবার সকাল থেকে নাইওরপুল পয়েন্টে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। ১২টার দিকে সড়কে নোট উড়তে দেখেন। প্রথমে ভড়কে গিয়েছিলেন তিনি। নোটগুলো সংগ্রহ করে গুণে দেখেন ৩৫টি নোট। সর্বমোট ১৭ হাজার ৫০০ টাকা।  

তিনি বলেন, বিষয়টি ট্রাফিক সার্জেন্ট সঞ্জয় কুমার বিশ্বাসকে অবহিত করে তার কাছে দিতে চান। সঞ্জয় কুমার তার কাছেই রাখতে বলেন। বিষয়টি সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাবকে অবহিত করেন।টাকাগুলো হাতে নিয়ে ভাবতে থাকেন, কারো প্রয়োজনীয় হতে পারে। 

টাকার মালিক সিলেট নগরের শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বালু ও পাথর ব্যবসায়ী স্বপন পাল। তিনি বাসা থেকে বের হয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় টাকা জমা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। পথে টাকাগুলো পড়ে যায়।  

স্বপন পাল বলেন, ব্যাংকে যাওয়ার পরপকেটে টাকাগুলো না পেয়ে মাইকিংয়ের জন্য বের হন। নাইওরপুল এলাকায় পৌঁছালে সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য তাদের থামিয়ে বিস্তারিত জানতে চান। পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে এমন ব্যবহার পেয়ে মুগ্ধ হয়েছেন বলে তিনি।  

ট্রাফিক সার্জেন্ট সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন, টাকাগুলো পাওয়ার পরপরই তিনি মালিকের খোঁজে শিবগঞ্জ এলাকা পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তবে কাউকে পাননি। মালিকের মাইকিং করার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাবের কার্যালয়ে স্বপন পালের কাছে টাকাগুলো হস্তান্তর করা হয়।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ, ট্রাফিক সার্জেন্ট আবু বক্কর শাওন ও কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী। মোহাম্মদ আলী বলেন, টাকাগুলো প্রকৃত মালিকের হাতে দিতে পেরে তিনি আনন্দিত।  


সর্বশেষ সংবাদ