তারুণ্যের ভাবনা

সবার যাত্রা যেখানে শেষ, বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-ভাবনা সেখানেই শুরু

তারুণ্যের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু
তারুণ্যের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু  © টিডিসি ফটো

সময় বহমান কিন্তু ইতিহাস যেন চিরজীবন্ত। ইতিহাসের পাতা উল্টালেই যেন এখনো সেই বীর বাঙালির মত রক্তে জ্বলে ওঠে আগুন, অস্থিমজ্জায় আসে প্রেরণা সাহস আর হার না মানা উদ্দীপনা। বাঙালী জাতিরও এমন একজন ছিলেন। যিনি ছিলেন জাতির প্রেরণাশক্তি; আজও যেন জাতি তার অভাব অনুভব করেন। বাংলায় হয়তো হাজার নেতা এসেছেন-গেছেন, কিন্তু টুঙ্গিপাড়ার খোকা যেন আর বাংলায় জন্মায় না।

আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন। এই জন্মতিথিতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিজেদের ভাবনার কথা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। জানিয়েছেন তারুণ্যের চোখে বৈচিত্র্যময় এক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে। তাদের ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ডিআইইউ প্রতিনিধি সাদিয়া তানজিলা

বঙ্গবন্ধু আজীবন থেকে যাবেন, বাঙালীর আত্মায়-অস্তিত্বে
আমাদের চোখে শেখ মুজিব আদর্শ আর অনুপ্রেরণার এক নাম। যিনি আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস যুগিয়েছেন, সত্য-ন্যায়ের জন্য লড়তে শিখিয়েছেন। ১৯৪৮-এর দেশ ভাগ, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নিবার্চন, ৬৬’র ৬দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন এবং সবশেষে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এসবের ইতিহাস আমাদের সবার জানা। একজন বঙ্গবন্ধুর কতটা অবদান ছিল তা আমাদের অস্বীকারের কোনো উপায় নেই।

দীর্ঘ ৪৬৮২ দিন তিনি পরিবার ছেড়ে কারাগারে নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ বঙ্গবন্ধু চাইলেই পাকিস্তান সরকারের প্রস্তাব মেনে নিয়ে নির্ভেজাল এক সুখী জীবন কাটাতে পারতেন।

এটা সত্যিই দুঃখজনক যে, যে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তান বর্বর বাহিনী হত্যা করার মতো দুঃসাহস করতে পারেনি সেই মুজিবকে স্বাধীন বাংলাদেশের কিছু বিপদগামী সেনা সদসদের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয়েছে।আজ বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকীতে তার আত্মার বিদেহী মাগফিরাত কামনা করছি। বঙ্গবন্ধু আজীবন থেকে যাবেন, বাঙালীর আত্মায়, অস্তিত্বে অনুপ্রেরণায় ও সম্মানে।

তামান্না সুলতানা
অর্থনীতি বিভাগ,
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

শোষকের প্রতি কঠোর ছিলেন, শোষিতের প্রতি কোমল
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।  ছাত্রজীবন থেকেই যিনি ছিলেন বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলনের অগ্রভাগের অতিপরিচিত একটি মুখ। রাজনৈতিক জীবনে সামনের থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অসংখ্য আন্দোলনের। যার ফলে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে তাকে। জীবনের ১৪টি বছর কারাগারের ভেতরেই কাটিয়ে দিয়েছেন।

শোষকদের প্রতি তিনি ছিলেন কঠোর আর দেশের শোষিত মানুষের প্রতি ছিলেন কোমল। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজের আদর্শে অটুট ছিলেন তিনি। তাইতো বাঙালি তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। আজ আমরা বঙ্গবন্ধু বলতে সাধারণত আমরা ব্যক্তি মুজিবকে চিত্রায়িত করি। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টির সাথে অবিভাজ্যভাবে জড়িয়ে আছে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এ নেতার নামটি।

আরও পড়ুন: শুভ জন্মদিন, বাঙালির মহানায়ক

বাঙালির অতি ভরসা ও আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। ৭ মার্চের ভাষণ তারই প্রমাণ বহন করে। ৭ মার্চের ভাষণের পর গোটা বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। হাজারও তরুণ বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করেছিল স্বাধীনতার জন্য।

সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন তিনি জীবনভর। তাইতো যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মাত্র ১০ মাসের মাথায় শহীদের রক্তে লিখিত সংবিধান দেশবাসীকে উপহার দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরে ১৪০টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন।

তিনি তরুণদের কাছে একাধারে জীবন সংগ্রামের, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ও আদর্শের প্রতীক, উদার ব্যক্তিত্ব, সফল রাজনীতিবিদ। তাইতো আজকের তরুণ প্রজন্ম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আদর্শ হিসেবে নিজ চিন্তাচেতনায় ধারণ করে।

এস.এম. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জয় 
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান-বিশেষায়িত মতাদর্শ
‘বঙ্গবন্ধু’ এই  শব্দটি মূলত একটি আবেগ। বাংলা-বাঙালির আবেগ। বাঙালি জাতীর মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের উপাধি বলে যদি এই শব্দকে সীমাবদ্ধ করতে চাই তাহলে ভুল হবে। কেননা এই শব্দ একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, বিশেষায়িত মতাদর্শ। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে যে অধিকার সচেতনতা জরুরী, তা পরিপূর্ণভাবে ছিলো বঙ্গবন্ধুর জীবনে।

অধিকার সচেতনতা মানবজীবনে টিকে থাকার লড়াইয়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। বাঙালির বিভীষিকাময় সময়গুলোতে যখন নেতৃত্বের অত্যাবশকীয়তা ছিলো, ঠিক সেই মুহুর্তে নিজে ব্যক্তি জীবনকে তুচ্ছ করে যে মানুষগুলো এগিয়ে এসেছিলেন তাদের কর্ণধার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।

তাহমিদ হাসান
আইন বিভাগ,
গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

অনুপ্রেরণার বাতিঘর বঙ্গবন্ধু
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি আন্দোলনের নাম। একটি জাতির ইতিহাসের নাম। একটি দেশের মানচিত্রের নাম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির অন্ধকার দিনের এক জ্বলন্ত পিদিম। বাঙালি জাতির শোষণ, বঞ্চনা অধিকার আদায়ে অগ্রপথিক। সবার যাত্রা যেখানে শেষ বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-ভাবনা সেখান থেকেই শুরু।

একটি দিশেহারা জাতিকে দেখিয়েছেন আশার প্রদীপ। যিনি তার সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন পরোপকারে। যাকে অন্যায়ভাবে বারবার জেল-জুলুমের মাধ্যমেও শত্রম্নরা পরাভূত করতে পারেনি।

যাকে জীবনের শেষাবধি লড়েছেন অন্ধকার আর কালোর বিরুদ্ধে। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে নিজের অধিকার আদায় করে নিতে হয়। কীভাবে জালিমের হুঙ্কারকে ছাপিয়ে সত্য কণ্ঠ সমুন্নত রাখতে হয়? তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক। তিনিই আমদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর।

রেজোয়ানুল হক রিজু
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ,
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence