পিরোজপুর প্রতিনিধি
পরীক্ষায় ফেল করায় ইনস্টিটিউট ইনচার্জের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি সমন্বয়কের
- পিরোজপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৪ PM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৪ PM

পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটে নার্সিং পরীক্ষায় ফেল করায় ইনস্টিটিউটের ইনচার্জের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মিজান সিরাজগঞ্জের তারাস উপজেলার আবু তালেবের ছেলে এবং পিরোজপুর নার্সিং ইন্সটিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর সাজেদা খানম বলেন, ‘মিজান আমাদের অত্র ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ক্লাসে খুব অমনোযোগী ছিল। সে প্রথম বছরে ১ বিষয়ে ফেল করে। তখন বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন ঝামেলা না করলেও, এবারে ফেল করে সে বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল ইনস্ট্রাক্টরসহ সকল শিক্ষার্থীরা বিব্রতবোধ করছি। ফেল, পাশ পরীক্ষার একটি অংশ। সে আবার কিছুদিন পরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু তার এই উগ্রতাপূর্ণ আচরণে আমরা খুবই কষ্ট পেয়েছি।’
নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর প্রভা রানী বড়াল বলেন, ‘মিজানুর রহমান আমাদের নার্সিং ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী। গত ১১ মার্চ বিএনএমসির রেজাল্ট দেয়ার পর থেকে সে বিভিন্নভাবে সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী দিয়ে ফোন দিয়ে আমাদের পাশ করানোর ব্যাপারে হুমকি দেয়। সে যে বিষয়ে ফেল করেছে সে বিষয়ে আমাদের কোন টিচার পরীক্ষা নেয়নি। ঐ বিষয়ে বাহির থেকে টিচার নিয়োগ দেয়া হয়। আমরা টিচার হিসেবে কখনোই কোন শিক্ষার্থী ফেল করুক সেটা চাই না।’
এ বিষয়ে পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ বেবী রায় আরও বলেন, ‘মিজান ৫ আগস্টের পূর্বে এই প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে চলেছে। এখনো প্রভাব খাটাচ্ছে। কোন এক অদৃশ্য হাত তার পিছনে কাজ করছে। পরীক্ষার আগে মিজান দলবল সহ এসে পরীক্ষার হল ছেড়ে দেওয়া সহ পাশ করাতে হুমকি দেন। পরে পরিক্ষায় ফেল করলে আমার নামে মিথ্যাচার ও আমাকে মামলাসহ বিভিন্ন রকম হুমকি দিচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।’
অন্যান্য ইনস্ট্রাক্টররা আরও বলেন, ‘মিজান প্রথম বর্ষ থেকেই অমনোযোগী ছিল এবং এবার ফেল করার পর থেকে নানা প্রকার হয়রানির মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের পরিবেশকে অশান্ত করছে।’
তারা অভিযোগ করেন, তিনি রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে সমন্বয়কের পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর এই উগ্র আচরণ আরও বেড়েছে।
দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থী সুস্মিতা বলেন, ‘পরীক্ষায় ফেল হতেই পারে, কিন্তু ভিত্তিহীন হুমকির মাধ্যমে আমাদের শিক্ষকদের বিরক্ত করা উচিত নয়।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মিজান সবসময় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের প্রভাব দেখাতো। সে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতো। গত ৫ আগস্টের পর হঠাৎ তিনি সমন্বয়ক বনে যান। তিনি পরীক্ষায় ফেল করে আমাদের ইনস্ট্রাক্টরদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে। পড়ালেখায় পাশ ফেল তো থাকবেই। এটা কেন মানতে পারবে না, এখানে কেন প্রভাব দেখাতে হবে। অবিলম্বে তাকে এই প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা উচিত তার ছাত্রত্ব বাতিল করা উচিত।’
অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘তারা আমার শিক্ষক। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা তো দূরের কথা কোন খারাপ কথাও আমি বলিনি।’ তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু ফোনে বলবেন না বলে কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা পুরো ঘটনার খোঁজখবর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।