ভর্তির শর্ত ভাঙ্গলে বেসরকারি মেডিকেল-ডেন্টালের অনুমোদন বাতিল

মেডিকেল শিক্ষার্থী
মেডিকেল শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

দেশের বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে নির্ধারিত আসনের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না। ভর্তি নীতিমালার কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করা হবে। 

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা-২০২৪’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কলেজে ভর্তির পূর্বে বা পরে দেশি বা বিদেশি ছাত্র/ছাত্রীর ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কোনো তথ্য মিথ্যা বা ভুল প্রমাণিত হইলে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে তাহার ভর্তি বাতিল করাসহ আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

কোনো প্রতিষ্ঠানেই অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত কিংবা নীতিমালায় বর্ণিত প্রক্রিয়ার বাইরে দেশি/বিদেশি ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করা যাইবে না; করিলে কর্তৃপক্ষ যথোপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতিমালার কোনো শর্ত ভঙ্গ করিলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করা হবে।

ভর্তিকৃত দেশি/বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশের প্রচলিত আইন মানিয়া চলিতে হইবে। শৃঙ্খলা পরিপন্থী অভিযোগ প্রমাণিত হইলে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ একাডেমিক কাউন্সিল এর সিদ্ধান্ত মানিয়া নিতে বাধ্য থাকবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‍্যাগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩” সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

প্রতিটি সরকারি/বেসরকারি মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ/ডেন্টাল ইউনিট মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে নির্দেশনা “হাইকোর্ট ডিরেক্টিভস-২০০৯” পালনে বাধ্য থাকবে।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী মেডিকেল-ডেন্টালে ভর্তির যোগ্যতা
আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। কেবল সরকার কর্তৃক বিদেশিদের সংরক্ষিত আসনের জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৯ পয়েন্ট হতে হবে। উপজাতি ও পার্বত্য জেলার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা দুটিতে মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮ পয়েন্ট হতে হবে। তবে এককভাবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ ৩ দশমিক ৫০ পয়েন্টের কম গ্রহণযোগ্য নয়।

এসএসসি এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় অবশ্যই ফিজিক্স (পদার্থ বিজ্ঞান), কেমিস্ট্রি (রসায়ন) ও বায়োলজিতে (জীব বিজ্ঞান) ন্যূনতম জিপিএ ৪ পয়েন্ট থাকতে হবে।

যে শিক্ষাবর্ষের জন্য মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা অংশগ্রহণ করবে সেই ইংরেজি বর্ষ বা পূর্ববর্তী ইংরেজি বর্ষে প্রার্থীকে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পাস করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে তার এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পাসের পূর্ববর্তী ২ শিক্ষাবর্ষের মধ্যে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পাস করতে হবে।

প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া
এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ২০০ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ এবং ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। কোনো শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস/বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় এইচএসসি পরীক্ষায় সদ্য উত্তীর্ণদের মোট (Aggregated) নম্বর (এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এর ১৫ গুণ + এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এর ২৫ গুণ+ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর)-এর ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। পূর্ববর্তী বৎসরের এইচএসসি পাস প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর এবং পূর্ববর্তী বছরের সরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে ১০ নম্বর কেটে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে।

সরকারি ও বেসরকারি সব মেডিকেল কলেজের জন্য একইসঙ্গে একই প্রশ্নপত্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মেডিকেল কলেজের ভর্তি ভর্তি পরীক্ষার এক মাস পর সরকারি ও বেসরকারি সব ডেন্টাল কলেজ এবং ডেন্টাল ইউনিটের জন্য একই সঙ্গে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ইংরেজি মাধ্যমের ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল পাস করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য ইংরেজিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে।

লিখিত ভর্তি পরীক্ষা ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটি এক নম্বর করে মোট (এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী) ১০০ নম্বরের বিষয়ভিত্তিক বিভাজন পদার্থবিদ্যা ২০, রসায়নবিদ্যা ২৫, জীববিজ্ঞান ৩০, ইংরেজি ১৫ ও সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ) ১০ অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।

লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ