৪০ বছর ধরে বেতনহীন, জাতীয়করণের আশায় হাওরপাড়ের একমাত্র মাদ্রাসা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৩ PM , আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৩ PM

বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে অগ্রগতি হলেও সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের হাওরপাড়ের মানুষ এখনও শিক্ষার বৈষম্যের শিকার। তিন দশকের বেশি সময় ধরে সরকারি স্বীকৃতি ও বেতন-ভাতা ছাড়াই চলছে নবগ্রাম ধনপুর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, যা বর্তমানে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসা ধনপুর, চন্ডিপুর, নাচনী, চন্দ্রপুর, নয়াগাঁও ও সন্তোষপুরসহ ছয়টি এলাকার একমাত্র ইবতেদায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে বর্তমানে ১৫৭ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে, ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আগ্রহ কমে যাচ্ছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত মাদ্রাসায় উপবৃত্তি চালু থাকলেও বর্তমানে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দরিদ্র শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মাওলানা রুকুন উদ্দিন তিন দশক জাতীয়করণের অপেক্ষায় কাটিয়ে ২০২০ সালে মারা যান, তবে তার সেই স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি।
স্থানীয়রা মাদ্রাসাটির জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন। সরমঙ্গল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস ছামাদ বলেন, "প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পার হলেও শিক্ষকরা এখনও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দ্রুত মাদ্রাসাটি জাতীয়করণ করা হোক।"
বর্তমান শিক্ষক মাওলানা মোকাররম ইবনে রুকন বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার আমাদের হাওরাঞ্চলের মানুষ। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে শিক্ষকরা কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না, যা অত্যন্ত অমানবিক। আমরা চাই সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াক।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দরিদ্রতা, অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবের কারণে প্রায় ৮০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী মাধ্যমিকের আগেই ঝরে পড়ে।
অঞ্চলটির একমাত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি জাতীয়করণের দাবি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এখন দেখার অপেক্ষা, সরকার কবে এ দাবির প্রতিফলন ঘটাবে।