শহীদ আবু সাঈদকে ‘আত্মঘাতী জঙ্গি’ বললেন সেই বিতর্কিত রাষ্ট্রদূত

আবু সাঈদ
আবু সাঈদ  © ফাইল ফটো

কিছুদিন আগে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে কানাডায় চলে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ। সেখান থেকে নিয়মিতই অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছেন তিনি। রবিবার (১৩ এপ্রিল ) ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদকে ‘আত্মঘাতী জঙ্গি’ হিসেবে অবহিত করেন। এর আগে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে আলোচনায় আসেন বরখাস্ত হওয়া লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ তার ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, ‘আবু সাইদ যে একটা আত্মঘাতী জঙ্গি ছিল, এটা বলতে এত লজ্জা কীসের? লাদেনের যে-সব লোক টুইন টাওয়ারে বিমান ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, আবু সাইদ কী তাদের চেয়ে কম হঠকারী, কম বিপজ্জনক? ’

সরকারের দাপ্তরিক আদেশ অগ্রাহ্য করে অন্য দেশে চলে গিয়ে নিজেকে ‘নির্বাসিত’ দাবি করা এই কূটনীতিকের জঙ্গীদের দেশ ও জাতির জন্য বিপদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও লিখেছেন, ‘একজন জঙ্গি তার নিজের, পরিবারের, দেশের, গাজার, সবার জন্যই শুধু বিপদ আর বিপদ।

মরক্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ হারুন আল রশিদকে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরে ‘অনতিবিলম্বে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নানা অজুহাতে দেশে ফেরা বিলম্বিত করে তিনি চলে যান কানাডায়। সেখান থেকে ফেসবুকে এক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি। হারুন আল রশিদ নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈধ সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।’ তারপর থেকে নিয়মিত তিনি অন্তর্বর্তী সরকার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রমুখের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। আর আবু সাঈদ এক হাতে লাঠি নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট  দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


সর্বশেষ সংবাদ