কৃত্রিম জীবন্ত ত্বক রোবটের মুখে বসিয়ে হাসালেন বিজ্ঞানীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ PM
জাপানের বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে তৈরি কৃত্রিম জীবন্ত ত্বক রোবটে বসিয়ে সেটিতে হাসি ফুটিয়ে তুলেছিলেন। টোকিও ইউনিভার্সিটির বায়োহাইব্রিড সিস্টেম ল্যাবরেটরির অধ্যাপক শোজি তাকেউচির নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী মানুষের মুখের অনুরূপ একটি অ্যাকচুয়েটর (এক ধরনের বলপ্রয়োগকারী যন্ত্র) ব্যবহারের মাধ্যমে এই কাজ করেছেন। অ্যাকচুয়েটরটি এক্ষেত্রে ত্বকের লিগামেন্টের কাজ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন গবেষকেরা। ভিডিওতে দেখা যায়, বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম ত্বকের সব টিস্যুকে দলা পাকতে না দিয়ে, ছিঁড়তে না দিয়ে বা কোনো জায়গায় আটকে যেতে না দিয়ে সফলভাবে সেখানে হাসির অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
কৃত্রিমভাবে তৈরি ত্বককে যখনই কোনো শক্ত তলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে তখনই সেই ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আগের সব গবেষণায়। কিন্তু এবার ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও হাসি পুরোপুরি মানুষের মতো হয়নি। বরং অনেকটাই অ্যানিমেশন চরিত্রের হাসির মতো হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের আশা এই আবিষ্কার মানবসদৃশ রোবটিক যন্ত্রের বিকাশকে এগিয়ে নেবে বহুদূর।
টোকিও ইউনিভার্সিটির বায়োহাইব্রিড সিস্টেম ল্যাবরেটরির অধ্যাপক শোজি তাকেউচি বলেন, ‘আমাদের তৈরি করা ত্বকের লক্ষ্য হলো মানুষের ত্বকে পাওয়া জৈবিক কার্যক্রমের সম্পূর্ণ পরিসরের প্রতিলিপি করা। যেখানে মুখের পেশি, ঘাম গ্রন্থি, সেবাসিয়াস গ্রন্থি, রোমকূপ, রক্তনালি, চর্বি ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর ব্যাপক কার্যকারিতা আরও প্রাণবন্ত ও কার্যকর রোবোটিক সুযোগ-সুবিধাকে বাড়িয়ে দেবে।’
বায়োহাইব্রিড রোবোটিকসের পক্ষের বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এ ধরনের অগ্রগতি একদিন একটি সামাজিক বিপ্লবের সূত্রপাত করতে পারে। যেখানে মানুষ ও মানবসদৃশ রোবট পাশাপাশি বাস করবে এবং সেগুলো বাস্তব মানুষের মতোই কাজ করবে। জীবন্ত ত্বক রোবটকে মানুষের সঙ্গে আবেগপ্রবণ এবং আরও ভালো যোগাযোগের সুবিধা দেবে।
তাকেউচির দলটি এখন তাদের কাজের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। মিনি রোবট তৈরি করা হবে তাদের এই প্রকল্পে। যেগুলো কৃত্রিমভাবে তৈরি জৈবিক পেশি টিস্যু ও থ্রিডি প্রিন্টেড কৃত্রিম মাংস ব্যবহার করে তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে এই দলটি কৃত্রিম কোষের ঝিল্লি, নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং ইমপ্লান্টেবল ডিভাইস নিয়েও গবেষণা করছে।
তাকেউচির বিশ্বাস, দীর্ঘ সময় পাড়ি দিতে হবে রোবোটিক ত্বক শতভাগ বাস্তবসম্মত হওয়ার আগে। কেননা টেক্সচার, রং ও জৈবিক উপাদানের একীকরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দরকার। তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা আরও প্রাণবন্ত রোবট তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছি, তবে আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য সেগুলোর উপযোগিতা ও মিথস্ক্রিয়া ক্ষমতা বাড়ানো।’