৪০ ডিগ্রি গরমে কোনটি বেশি উপকারী, ডাবের পানি নাকি লেবুর শরবত?

গরমে কোনটি উপকারী, ডাবের পানি না লেবুর শরবত?
গরমে কোনটি উপকারী, ডাবের পানি না লেবুর শরবত?  © সংগৃহীত

সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষের জনজীবন। এ সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম হয়ে বের হয়। এর ফলে শরীরে অস্বস্তি, ক্লান্তির মত একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। তাই তো এমন তাপপ্রবাহের মধ্যে শরীরকে সুস্থ রাখতে কেউ ডাবের পানিতে চুমুক দিচ্ছেন। অনেকে আবার ভরসা রাখছেন লেবু শরবতের উপর। শরীর হাইড্রেটেড রাখতে আপনাকে খেতে হবে পানি ও পানিযুক্ত খাবার।

ডাবের যে দাম তা কেনা অনেকেরই সাধ্যের বাইরে। এ কারণে অনেকেই বাড়িতে ফিরে লবণ-চিনি দেওয়া লেবুর শরবত খেয়ে ঠান্ডা হতে চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই দুই অতি উত্তম পানীয়ের মধ্যে কোনটা বেশি উপকারী? কোনটা খেলে মিলবে বেশি উপকার?

পুষ্টিবিদরা বলছেন, ডাবের পানি হল প্রাকৃতিক শক্তিবর্ধক পানীয়। এই পানীয়ের মধ্যে রয়েছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো উপাদান। এসব উপাদান শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি ইলেক্ট্রোলাইটের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ডাবের পানিতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা গরমে ঘেমে ক্লান্ত হলেও তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। অন্যদিকে লেবুর রস দেওয়া শরবতের গুণও কম নয়। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, শরীরের পিএইচের ভারসাম্য রক্ষা করতে লেবুর রস দেওয়া শরবতের জুড়ি নেই। শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পুষ্টির বিচারে দুটি পানীয়ই উপকারী। শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি হলে, পটাশিয়ামের অভাবে পেশিতে টান ধরলে, গরমে ঘেমে ক্লান্ত হয়ে পড়লে কিংবা ডিহাইড্রেশনের সমস্যাতেও কাজে দেয় ডাবের পানি।

অন্যদিকে ডাবের পানির মতো শরীরে খনিজের অভাব পূরণ করতে না পারলেও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখে লেবুর শরবত। এই পানীয়টি আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। কিন্তু, এই পানীয়তে লবণ কিংবা চিনি দেওয়া হয়। এ কারণে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের লেবুর শরবত খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তবে গরমে সতেজ থাকতে দুটি পানীয়ই খাওয়া যেতে পারে। তবে কার শরীরে কী প্রয়োজন, সেই বুঝে পানীয় বেছে নেওয়াই ভালো।

প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে যে ১২ কাজ করবেন

ডাবে ওষধি গুণাগুণ: এক কাপ ডাবের পানি থেকে প্রায় ৬০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। এই পানীয়তে ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো একাধিক উপকারী খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। আবার উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে ডাবের পানিতে। ফলে গরমের দিনে ডাবের পানি পানে শরীর ঠান্ডা থাকে। শরীরে পানির ঘাটতিও পূরণ করে। একইসঙ্গে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য ফিরে আসে। এ জন্য গরমে ডাবের পানি পান করা যেতে পারে।

গরমে সুস্থ থাকতে যা খাবেন

লেবুর পানিতেও উপকার: লেবুর পানি বা শরবতেও শরীরের পানির ঘাটতি মেটানো সম্ভব। লেবুর শরবত পানে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি পাওয়া যায়। যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও পটাশিয়াম, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি২―এর মতো উপকারী ভিটামিন ও খনিজও রয়েছে। শরীর ভালো রাখার জন্য লেবুর শরবত পান করা যেতে পারে।

কার জন্য কোনটি নিষেধ: লেবু খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হয় অনেকের। যাদের এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তাদের লেবু থেকে দূরে থাকা উচিত। আবার ডাবের পানি হচ্ছে পটাশিয়ামের ভাণ্ডার। এই খনিজ কিছু ক্রনিক কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক। এ জন্য কিডনির ক্রনিক অসুখ থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডাবের পানি পান করা উচিত নয়।

উল্লেখ্য, অনেকে মনে করেন, আইসক্রিম ও ঠাণ্ডা বোতলজাত কোমল পানীয় খেলে গরম কম লাগবে। কিন্তু এগুলো খেলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্যই আইসক্রিম কিংবা কোমল পানীয় খাওয়ার পরপর তৃষ্ণার্ত বোধ করে মানুষ।

 

সর্বশেষ সংবাদ