ইফতারিতে যে কারণে খেজুর খাবেন, কোন খেজুরে কী উপকার জেনে নিন 

খেজুর
খেজুর  © সংগৃহীত

ইফতারে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস প্রায় সবারই আছে। অন্যান্য পরিচিত ইফতারির পাশাপাশি খেজুর কিন্তু প্রতিদিন থাকবেই। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন কেন প্রতিদিন ইফতারে খেজুর রাখা হয়? আসলে এই ফলটির রয়েছে অনেক উপকারিতা।

সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খেজুর সেটি দ্রুত পূরণে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেই খেজুরের আরও কিছু উপকারিতা-

খেজুরে রয়েছে প্রচুর আয়রন। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস দেহের আয়রনের অভাব পূরণ করে এবং রক্তস্বল্পতা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। যাদের এই রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের প্রতিদিন খেজুর খাওর অভ্যাস করা উচিত।

অনেকেরই খাওয়ার রুচি থাকে না। তাদেরকে নিয়মিত খেজুর খেতে দিলে রুচি ফিরে আসবে। খেজুর পেটের গ্যাস, শ্লেষ্মা, কফ দূর করে, শুষ্ক কাশি এবং এজমায় উপকারী।

শক্ত খেজুর পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। তাজা খেজুর নরম এবং মাংসল যা সহজেই হজম হয়।

হৃদপিণ্ডের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন খেজুর খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। সারারাত খেজুর পানিতে ভিজিয়ে সকালে পিষে খাওয়ার অভ্যাস হার্টের রোগীর সুস্থতায় কাজ করে।

খেজুর বিভিন্ন ক্যান্সার থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন খেজুর লাংস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার থেকে শরীরকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

খেজুরে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান থাকায় অনেক রোগ নিরাময় করা সম্ভব। সাথে সাথে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সহায়তা করে।

খেজুরে আছে ডায়েটরই ফাইবার যা কলেস্টোরল থেকে মুক্তি দেয়। ফলে ওজন বেশি বাড়ে না, সঠিক ওজনে শরীরকে সুন্দর রাখা যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পক্ষাঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য খেজুর খুবই উপকারী।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন খেজুর খেলে কী উপকার হবে

ডেগলেট নূর

এটি মাঝারি আকারের, নরম হয়। এমন খেজুরই বেশি পাওয়া যায় বাজারে। ডেগলেট নূরে শর্করার মাত্রা খুব কম, তবে ফাইবার বেশি। এই খেজুর খেলে মিষ্টি খাওয়ার ঝোঁকও কমবে আবার শরীরে প্রয়োজনীয় ফাইবারও ঢুকবে। মেদ কমাতে খুবই উপযোগী এই খেজুর। মিষ্টি কম থাকায়, ডায়াবিটিসের রোগীরাও খেতে পারেন এই খেজুর।

বারহি

বারহি খেজুর একটু হলদে হয়। মাঝারি আকার। এই খেজুরও ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম বারহি খেজুরে থেকে পাওয়া যেতে পারে ২৮২ কিলোক্যালোরি শক্তি, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট। যারা ওজন কমাতে কঠোর ডায়েট করছেন, তাঁরা সকালে এই খেজুর খেতেই পারেন। এটি খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমবে। হজম ভালো হবে।

আজওয়া

মধ্যপ্রাচ্যে এই খেজুরের চল বেশি। সৌদি আরবে খুবই জনপ্রিয় আজওয়া খেজুর। বিশ্বের অন্যতম দামি খেজুর হিসেবে পরিচিত আজওয়া। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর হাদিস অনুসারে, আজওয়া খেজুরের নিরাময়ের গুণ রয়েছে। রং কালচে হয় এবং এতে মিষ্টির পরিমাণ অন্যান্য খেজুরের থেকে সামান্য বেশি। আজওয়া খেজুরে প্রচুর পরিমাণে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এই খেজুর খেলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে এবং হজমশক্তি ভালো হয়। ফাইবারে ভরপুর এই খেজুর পরিমিত পরিমাণে খেলে তা ওজন কমানোর জন্যও সহায়ক হতে পারে।

সুক্কারি

সুক্কারি খেজুরের নাম আরবি সুক্কুর বা চিনি শব্দ থেকে এসেছে। এটি সৌদি আরবের আল কাসিম অঞ্চলে চাষ করা হয়। খেজুরটি দাতের ক্ষয়রোধ, কোলেস্টেরল কমানো ও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

মেডজুল

মেডজুল খেজুরের রাণি হিসেবে পরিচিত। বড় আকারের আর কড়া গন্ধের কারণে অনেকের কাছেই এটি জনপ্রিয়। এই খেজুর স্মুদি তৈরিতে বেশি ব্যবহৃত হয়। মেডজুল খেজুরে ক্যালসিয়াম ও আয়রন বেশি থাকে। প্রতিদিন একটি মেডজুল খেলে ফাইবারের ২০% পাওয়া যায়।


সর্বশেষ সংবাদ