শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ভ্রুক্ষেপ নেই যবিপ্রবির

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

৩৫ একরের ক্যাম্পাস। যেকোন ভবনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেই চোখে পড়বে বাকি সবগুলো ভবন। তবুও শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো যেন দেখছেই না যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কর্তাব্যক্তিরা। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট, স্যানিটেশনের অব্যবস্থাপনা, লিফট সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত যবিপ্রবির একাডেমিক ভবন ও ক্যাফেটেরিয়া।

তবে এসব বিষয়ে কোন নজরই নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে রয়েছে অসন্তোষ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এসব সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য তলা প্রতি মাত্র ১টি করে খাওয়ার পানির ট্যাপ রয়েছে। অথচ তলা প্রতি শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংখ্যা কমপক্ষে ৪০০-৪৫০ জন। আবার পানি সরবরাহ হচ্ছে অতীব ধীরে, নেই পানি পান করার মতো বোতল-গ্লাস বা কোনো মাধ্যম। নাম মাত্র ফিল্টার বা বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব ট্যাপের পানি।

আরও পড়ুন: হস্তান্তরের আগেই যবিপ্রবির শেখ রাসেল জিমনেসিয়ামে ফাটল

গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি পরীক্ষা করা হয়েছে কি না তারও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন বিভাগে পানি থাকে না। প্রশাসনকে বার বার জানালেও কোনো লাভ হয় না। এতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে পড়েছে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

ক্যাফেটেরিয়ায় চড়া দামে খাবার

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ১টি মাত্র ক্যাফেটেরিয়া। কিন্তু এখানে খাবার বিক্রি করা হয় বাইরের হোটেলগুলোর চেয়ে চড়া দামে। নেই স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থাও। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে খাবার রান্নার কাজ, নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা।

ঝুকিপূর্ণ লিফ্ট

সংকট এখানেই শেষ নয়, নবম তলা বিশিষ্ট একমাত্র একাডেমিক ভবনে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে মাত্র ২টি লিফট। লিফট দু’টির ধারণক্ষমতা মাত্র ১৮ জনের। তবে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ১টি লিফট নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে।

আরও পড়ুন: প্রযুক্তি ভাড়া করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব না: যবিপ্রবি উপাচার্য

এছাড়া লিফট দুটি মাঝে মাঝেই আটকে যায়। পরে টেকনেশিয়ান এনে লিফট খুলে শিক্ষাথীদের বের করার ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার। কিছুদিন আগে আটকে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যও। ৯ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনে বেশিরভাগ সময় শিক্ষার্থীদের সিঁড়িবেয়ে ক্লাসরুমে যেতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা সব দিক দিয়েই অবহেলিত। চার হাজার শিক্ষার্থীকে পর্যাপ্ত নিরাপদ পানি দিতে না পারা চরম অবজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ। দ্রুত এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আলম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রধান প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করবো। আশা করি চলতি মাসের মধ্যেই একাডেমিক ভবনে বিশুদ্ধ পানির ও স্যানিটেশন সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ