তিন দফায় সময় বাড়লেও শেষ হয়নি হাবিপ্রবির নবনির্মিত হলের কাজ! 

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ছবি

তিন দফায় সময় বৃদ্ধির পরেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ছয় তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত হলটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে পারেনি। হাবিপ্রবির মেয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে নবনির্মিত হলের বিষয়ে আগ্রহের কমতি না থাকলেও বারবার সময় পিছানোর কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিরক্তি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। তবে বহুল প্রত্যাশিত এই আবাসিক হলে মার্চ মাস নাগাদ শিক্ষার্থী উঠতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট হলের হল সুপার প্রফেসর ডা. মোছাঃ আফরোজা খাতুন।

৬৯৬ আসন বিশিষ্ট হলটি অন্যান্য হলের তুলনায় অত্যাধিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন যেখানে থাকছে না কোনো গণরুম । ভবনের প্রতিটি কক্ষ ৪ আসনবিশিষ্ট হবে বলে জানা যায়। প্রধান ভবন ছাড়াও তিন তলা বিশিষ্ট আলাদা একটি ভবন তৈরি করা হয়েছে যার প্রথম এবং দ্বিতীয় তলা ব্যবহৃত হবে ডাইনিংয়ের জন্য। তৃতীয় তলায় জিমনেশিয়াম এবং কমনরুমের ব্যবস্থা করার পরিকল্পার আছে কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি অফিস রুমের দ্বিতীয় তলায় রিডিং রুমের ব্যবস্থা থাকছে।

আরও পড়ুনঃ উত্তাল শাবি ক্যাম্পাস, অবরুদ্ধ ভিসি

এই বিষয়ে নবনির্মিত হলের হল সুপার প্রফেসর ডা. মোছাঃ আফরোজা খাতুন বলেন, "ডিসেম্বরে হল স্থানান্তরের কথা থাকলেও আমরা এখন পর্যন্ত হল বুঝে পাইনি। হলের নির্মাণ কার্যক্রমের উপর নির্ভর করছে কবে নাগাদ আমরা হলে শিক্ষার্থী উঠাতে পারবো। তবে মার্চ মাসের মধ্যেই আমরা হল উন্মুক্ত করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি আরো জানান, নবনির্মিত হলটি ৭২০ আসন বিশিষ্ট হওয়ার কথা থাকলেও আসন সংখ্যা ৬৯৬টি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হলে সীট বরাদ্দের সময় সিনিয়রিটিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং একই ব্যাচের ক্ষেত্রে সিজিপিএ বিবেচনা করা হবে। ওয়াইফাই ব্যবস্থার বিষয়টি পরে বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।'

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারইনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তারিকুল ইসলাম জানান, "প্রধান ভবনের কাজ শেষ হয়েছে কিন্তু কমনরুম এবং ডাইনিং রুমের কাজ এখনো সম্পূর্ন হয়নি। এই অসম্পূর্ণ কাজগুলো মার্চের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। হল হস্তান্তরে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের শুরুতে পানির সমস্যার কারণে কাজ শুরু করতে অনেক সময় লেগেছিলো। তাছাড়া করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কর্মচারীরা কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করে ফলে আমাদের কাজে বিঘ্ন ঘটে।"

দ্রুত সময়ের মাঝে নতুন হল চালু করার ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, " হাবিপ্রবিতে হল সংকটের কারণে আমাদের অতিরিক্ত খরচ বহন করে বিভিন্ন মেসে থাকতে হচ্ছে। এই হল চালু হলে অনেক শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাবে। এতে করে বাঁশেরহাটের মেসমালিকদের একচেটিয়া বানিজ্য কমে যাবে। "

আবার বিজ্ঞান অনুষদের এম.এস এর শিক্ষার্থী সাবরিন সুলতানা বলেন, " মেসে অবস্থানের ক্ষেত্রে আমাদের নানা রূপ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বছর ভিত্তিক চুক্তি সহ উন্নয়ন ফি প্রদান কোনো ভাবেই যৌক্তিক না। তাছাড়া পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল সহ মেসের নানা ধরনের বিল পরিশোধ করা সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষে এতো সব খরচ বহন করে মেসে অবস্থান করা অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। অনেক শিক্ষার্থী এসব খরচ বহন করতে না পারার কারণে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থায় পড়তে হয়। এছাড়াও কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শহরের দিকে মেসে অবস্থান করে। তাই নতুন হল দ্রুত চালু হলে হাবিপ্রবির পরিবহনের উপর যেমন চাপ কমবে ঠিক তেমনি অল্প খরচে নিজেদের ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম হবে শিক্ষার্থীরা "।

উল্লেখ্য যে, নবনির্মিত হলের এখন পর্যন্ত কোন নাম প্রশাসন থেকে চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ