রুয়েটে কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিভা অন্বেষণ শীর্ষক সেমিনার

  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর এর ফার্ম মেশিনারি এন্ড পোস্ট-হারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আয়োজনে “কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিভা অন্বেষণ শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী মেলা” অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামের সামনে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন করেন রুয়েট  উপাচার্য প্রফেসর ড. এস.এম. আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিচালক প্রফেসর ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার। 

পরবর্তীতে অডিটোরিয়ামে “কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিভা অন্বেষণ” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এস. এম. আব্দুর রাজ্জাক। 

এ সময় প্রধান অতিথি উপাচার্য প্রফেসর ড. এস. এম. আব্দুর রাজ্জাক আয়োজকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিদেশি প্রযুক্তির আদলে অনেক কম খরচে দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছেন। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। এ ধরনের প্রযুক্তি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে, যদিও ইতোমধ্যে অনেক প্রযুক্তি কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এতে কৃষির উৎপাদন খরচ অনেকাংশে কমে গেছে, ম্যানপাওয়ার এবং সময় সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া আমরা ভোক্তা পর্যায়ে স্বল্প মূল্যে কৃষি পণ্য ক্রয় করতে পারছি। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমার মনে হয় দেশের অন্যান্য সেক্টরের তুলনায় কৃষি ও মৎস্য  সেক্টরে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এজন্য ছোট একটা দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমরা ১৮ কোটি জনগণের খাদ্যের জোগান দিতে সক্ষম হচ্ছি। 

সবশেষে, তিনি এ ধরনের সেমিনার ও মেলা আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম,পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রোকোনুজ্জামান ,সরেজমিন গবেষণা বিভাগ রাজশাহীর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: সাইদুর রহমান, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ রাজশাহীর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: সাখাওয়াত হোসেন,এফএমপি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও এফএমডিপি এর প্রকল্প পরিচাক ড. মো. নূরূল আমিন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এফএমপি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা  ড. মোহাম্মদ এরশাদুল হক। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের  শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। 

সেমিনারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে আয়োজিত "এগ্রি মেকানাইজেশন আইডিয়া কনটেস্ট"  এর প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয় । যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কিত বিভিন্ন আইডিয়া পোস্টার আকারে উপস্থাপন করেন। 

প্রতিযোগিতায় সোল হাইড্র নেক্সাস  নামক প্রজেক্ট এর ধারণা দিয়ে প্রথম হন রুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী দীপা। এই প্রজেক্ট এর মাধ্যমে দেশের লবণাক্ত অঞ্চলের সোলার প্যানেল দিয়ে তার নিচে হাইড্রোপনিক কৃষি  প্রযুক্তি ধারণা দেওয়া হয়েছে।

একইসাথে সোলার স্নো প্রজেক্ট প্রস্তাব করে দ্বিতীয় হয়েছেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ খান মোহাম্মদ কবির হোসেন মৃধা এবং মোহাম্মদ আশিকুর রহমান আশিক। তাদের প্রস্তাবিত প্রজেক্টটির মাধ্যমে মোবাইল ভ্যানে সোলারের মাধ্যমে কোল্ড স্টোরেজ ডেভেলপ করে কৃষি খাদ্য পরিবহণ ও সংরক্ষণের ধারণা দেওয়া হয়। 

প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আহমেদ যার প্রজেক্ট এর নাম ছিল স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার। যেখানে সেন্সরের মাধ্যমে মাটির আর্দ্রতা ও সারের পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় সারের মাত্রার পরিমাণ নির্দেশকের মত যন্ত্র আবিষ্কারের ধারণা দেওয়া হয়।

মেলায় বারি জাতীয় সবজি ধৌতকরণ যন্ত্র, বারি শস্য ঝাড়াই যন্ত্র, বারি কমপোস্ট সেপারেটর, বারি শক্তি চালিত বাদাম মারাই যন্ত্র, মোবাইল বারি ভুট্টা মারাই যন্ত্র, বারি গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ যন্ত্রসহ আরও বেশ কিছু যন্ত্র প্রদর্শন করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ