শাবিপ্রবির আবাসিক হলে নিরাপত্তাহীনতায় শিক্ষার্থীরা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও সব প্রশাসনিক বডি পদত্যাগ করেছেন। এতে প্রশাসন কার্যত শূন্য থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে হল ছাড়া শুরু করেছেন শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ। অন্যদিকে অনেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন মেসে রেখে আসছেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হলগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা হল ছেড়ে দিয়েছেন। সাবেক কর্মীরাও হল ছেড়েছেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়া ছাত্রলীগ কর্মীরা হলে অবস্থান করছেন। তাদের দাবি, তারা পূর্বে পরিস্থিতিতির শিকার হয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। তবে এখন ছাত্রলীগের সঙ্গে নেই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে হল প্রশাসন না থাকায় ছাত্ররা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রশাসনহীন শাবিপ্রবিতে দুর্বৃত্তদের মোটরসাইকেল মহড়ার কারণে আতঙ্ক বাড়ছে। এতে ছাত্ররা সম্মিলিতভাবে হলে থাকার কথা বললেও অনেকে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। 

শাহ পরান হলের নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, অনেক শিক্ষার্থী হল ছেড়ে বাসায় চলে গেছেন। আবার অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র বন্ধুদের মেসে রেখে আসছেন বলেও জানা যাচ্ছে। 

এদিকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের ডাকা সমাবেশে তারা হলেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজকে শিক্ষার্থীদের মিছিলে ছাত্রলীগের অনেক পদধারী নেতাদের দেখা গেছে। তারা সমন্বয়কদের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কথা বলছি, এর মানে এই নয় যে তাদেরকে জায়গা করে দিচ্ছেন। এ সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে যারা সংযুক্ত আছেন, সবাইকে হল ছেড়ে দেওয়ার আহবান জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকের দাবি, যারা প্রকাশ্যে ছাত্রলীগের হয়ে সামনে থেকে আন্দোলনের বিরোধীতা করেছে, তাদের অনেকে সাধারণ শিক্ষার্থী সেজে এখনো হলে অবস্থান করছে। তাদের কারনেই নিরাপত্তাহীনতায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন: বন্যার্তদের সহায়তায় একদিনের বেতন দেবেন রাবি শিক্ষকরা

বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা নয়াবাজার থেকে ১০-১২টি মোটরসাইকেল পেছনের গেট দিয়ে প্রবেশ করে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও নিরাপত্তাকর্মীরা। তাদের প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক পরা ছিল। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের হল ত্যাগ করার জন্য ১২ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেন বলেও জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মী প্রত্যক্ষদর্শী আরিফ হোসেন বলেন, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ নয়াবাজার আবাসিক এলাকা থেকে ১০-১২টি মোটরসাইকেলে ২০-২৫ জন লোক ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এ সময় তারা হলের সামনে এসে ‘হই হই রই রই, ছাত্রলীগ গেল কই’সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের মধ্যে একজন হলে প্রবেশ করে আমাকে বলেন, সবাই যেন দিনের ১২টার মধ্যে হল ছেড়ে দেন। মুখে মাস্ক আর মাথায় হেলমেট থাকায় কাউকে চেনা যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ