একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা

  © ফাইল ছবি

অবশেষে দেড় মাস পর একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে বর্জন ও পরবর্তীতে স্থগিত হওয়া টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বুয়েট প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগের শ্রেণি-প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় বসে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১১ মে থেকে সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বুয়েটের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এর আগে আগামী সপ্তাহে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হবে। এদিকে, আগামী ৬ জুনের মধ্যে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করার চিন্তা-ভাবনা করছে বুয়েটে প্রশাসন।

শ্রেণি-প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে বুয়েট প্রশাসন। এসবের মধ্যে রয়েছে-

১) গত ১ এপ্রিল সংবাদ মাধ্যমে বুয়েটের ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আদেশ স্থগিত করার বিষয়ে হাইকোর্টের রুল জারি সম্পর্কিত আইনী প্রক্রিয়া পরিচালনা করার জন্য বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ বরাবর ক্লাস প্রতিনিধিদের প্রস্তাবকৃত আইনজীবীদের তালিকা হতে একজন আইনজীবী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী নিয়োগ প্রদান করবে। আইনী প্রক্রিয়া পরিচালনার নিমিত্তে আইনজীবীর যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বহন করা হবে।

২) বুয়েটের শিক্ষার্থীরা উপর্যুক্ত আইনী প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হতে চায় কিনা তা আগামী ২ কার্য দিবসের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে জানাবে। শিক্ষার্থীরা পক্ষভুক্ত না হতে চাইলে তার কারণ উল্লেখ করবে। শিক্ষার্থীরা পক্ষভুক্ত হতে চাইলে আইনী প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য তাদের প্রস্তাবকৃত আইনজীবীর মধ্য থেকে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাছাইকৃত আইনজীবীর যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এক্ষেত্রে বুয়েট তার প্যানেলভুক্ত আইনজীবী হতে একজনকে বুয়েটের পক্ষে আইনী প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করবে। 

৩) সকল ব্যাচের শ্রেণি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের প্রস্তাব শ্রেণি প্রতিনিধিগণ বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর প্রেরণ করবে। শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদল নিয়োগকৃত/পক্ষভুক্ত আইনজীবীর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করবে, আইনী প্রক্রিয়ার বিষয়ে আপডেট নিবে এবং সকল শিক্ষার্থীকে আপডেট প্রদান করবে।

৪) বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নযোগ্য শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিসমূহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে।

বুয়েটে সাধারণত সব ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা একসঙ্গে শুরু হয়। পরীক্ষার পুরো সময়টাতে কোনো ব্যাচেরই ক্লাস থাকে না। গত ৩০ মার্চ থেকে বুয়েটে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঈদের আগে ও পরে ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা বর্জন করেন বুয়েটের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

এ প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে পরীক্ষাগুলোর তারিখ পুনর্নির্ধারণ করে পুনরায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বুয়েট কর্তৃপক্ষের জারি করা ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ কার্যক্রমে হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন, তারা কপি পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এদিকে, মঙ্গলবার বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগের শ্রেণি-প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় বসে বুয়েট প্রশাসন। সেখানে এসব বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ