এবার রাবির বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ বুয়েট ক্রিকেট দলের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৫ AM , আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:০৮ PM
এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দর্শক ও ম্যানেজমেন্ট এর বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের গায়ে হাত দেওয়া এবং জোরপূর্বক ম্যাচ হারানোর অভিযোগ করেছে বুয়েট ক্রিকেট দলের সদস্যরা। এর আগে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) খেলোয়াড়দের ওপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের অতর্কিত হামলায় ঢাবির ৬ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বুয়েট ক্রিকেট টিমের সদস্য হাসান মাসুম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে তাদের সাথে খেলার সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন। বুয়েট টিমের আরেক সদস্য রায়হান ইফতিও একি অভিযোগ করেন।
বুয়েট ক্রিকেট টিমের সদস্য হাসান মাসুম লেখেন, ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট , খেলোয়াড়, দর্শক এটাকে নষ্ট করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় টিমের হয়ে ঢাকার বাহিরে আমার প্রথম খেলা। তাই আমি এ টুর্নামেন্ট নিয়ে অনেক আগ্রহী ছিলাম। এ টুর্নামেন্টে বুয়েট গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে কোয়ালিফাই করে।
কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা পড়ে স্বাগতিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে। আমরা এটা জানতাম ঘরের মাঠে তারা কিছু সুবিধা পায়। কিন্তু খেলা যখন শুরু হলো দর্শকরা আমাদের হুমকি দেওয়া শুরু করে "আজকে এইখান থেকে জিতে বের হইতে পারবি নাহ" আম্পায়ার বলছে "তোমরা ভালো জায়গা থেকে আসছো ভাল মতো খেল এইখানে খেলার পরিবেশ ভালো নাহ" "কিছু ডিসিশন তোমাদের বিরুদ্ধে যাবে কিছু মনে কইরো নাহ"
আমরা তখন বুঝে গিয়েছিলাম আমাদের এখানে জেতার সুযোগ নেই। তাও আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করছি। রাবি ভালো শুরু করলেও আমাদের স্পিনাররা খেলা ঘুরিয়ে দেয় এবং একটা সময় তাদের ৯৩ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায়। আশ্চর্যজনকভাবে পুরো ম্যাচে এতো এলবিডব্লিউ এতো আবেদনের পরেও আম্পায়ার একটা এলবিডব্লিউ রেসপন্স পর্যন্ত করেনি।
যখন আমরা উইকেট পাওয়া শুরু করেছি তখন থেকে কিছু দর্শক আমাদের প্লেয়ারদের গায়ে হাত দেওয়া শুরু করে। এমনও হয়েছে তাদের গায়ে হাত দেওয়ার কারণে আমাদের খেলোয়াড় ফিল্ডিংয়ের জায়গা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে।
ভয়ংকর বিষয় হল, একটা চার আম্পায়ার দেয়নি। এমন সময় ম্যানেজমেন্ট ও একটা মেয়ে মাঠে প্রবেশ করে। তার ২ বল পর আম্পায়ার ঘোষণা দেয় এটা চার হয়েছে।
আমাদের বুয়েট টিমের ব্যাটিং লাইনআপ অনেক শক্তিশালী ছিল। কিন্তু আমরা যখন ব্যাটিং করতে নামলাম তখন তাদের প্রতিটি এলবিডব্লিউ আবেদনআমাদের আউট দিয়ে দিচ্ছে আম্পায়ার। স্ট্যাম্পের বাহিরে বল খেলোয়াড়ের শরীরে লাগে এবং সেটা চার হয়। আম্পায়ার উলটা ঘোষণা দেয় এটা আউট।
আমি নন স্ট্রাইকারে ছিলাম। লেগের বাহিরে বলও আম্পায়ার ওয়াইড দেয়নি। আমরা এ ম্যাচ ২৬ রানে হেরেছি। পরিস্থিতি এমন ছিল আমরা এ বিষয়ে একটা কথা বলতে পারিনি সেখানে এবং রাজশাহী ত্যাগ করার আগে এ বিষয়ে লিখতেও পারিনি। আমি ভেবেছি এটা নিয়ে আমি লেখবনা। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আজকে যে ঘটনা ঘটেছে আমি আর না লিখে পারলামনা। এ ঘটনা আমাদের সাথেও ঘটতো যদি আমরা আজকে ফাইনালে থাকতাম। গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট মাঠে খেলেছে । আমরা তাদেরকে যে সম্মান দিয়েছিলাম তারা সেটার যোগ্য ছিল না। তাদের কাজের জন্য তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।
বুয়েটের আরেকজন রায়হান ইফতি তার ফেসবুকে বলেন, ঘরের লোকজনের তাদের দলের প্রতি সমর্থন দেখানো, তাদের জন্য উল্লাস করা, এমনকি বিরোধী দলের সাথে হালকা-হৃদয় বানারে জড়িত হওয়া স্বাভাবিক। দলের প্রতি সমর্থন দেখানো আর প্রতিপক্ষের প্রতি শত্রুতা করার মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য আছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালে জনতা আমাদের প্রতি শত্রুতা ও আগ্রাসনের নিদর্শন প্রদর্শন করে। ঘরের মাঠে রাবি এর বিপক্ষে খেলা ১৬ জনের দলের বিপক্ষে খেলার মত ছিল। এছাড়া, সীমান্ত দড়ি দিয়ে থাকা ফিল্ডারদের দর্শকরা শারীরিকভাবে ধাক্কা মেরেছিল এবং মৌখিক অপব্যবহারের শিকার হয়েছিল। ক্রিকেট ম্যাচে এত ভিড় আমার জীবনে আর হয়নি।